বগুড়ায় যমুনার ভাঙন, লোকালয় ও ফসলি জমি রক্ষায় আকুতি
![]() |
| টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল বগুড়ার ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ি খেয়াঘাটে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বগুড়ার ধুনটে ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের যমুনা নদীতীরবর্তী শহড়াবাড়ি নৌঘাট এলাকায় উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র কয়েক ঘণ্টায় নৌঘাটের অন্তত ১০টি দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একই সময়ে যমুনার ভাঙনের কবলে পড়েছে অন্তত ১০০ বিঘা ফসলি জমি। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ভাঙন অব্যাহত আছে।
স্থানীয়রা বলছেন, যমুনার ব্যাপক ভাঙন এখন লোকালয়ের দিকে ধেয়ে আসছে। নদীতীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। ফসল হারিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের কপালে। নদীভাঙন রোধে এখনও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ভাঙন অব্যাহত থাকলে হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, নদীভাঙন রোধে ২০০৩ সালে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্যের শহড়াবাড়ি ও বানিয়াজান নামে দুটি স্পার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালে ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ভূতবাড়ি থেকে শহড়াবাড়ি গ্রাম পর্যন্ত আরও তিন কিলোমিটার অংশে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক দিয়ে তীর সংরক্ষণ করা হয়। তবে নদী থেকে অবাধে বালু তোলায় শহড়াবাড়ি, শিমুলবাড়ি, পুকুরিয়া, ভূতবাড়ি ও ভান্ডারবাড়ি এলাকায় বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
গতকাল নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানান, যমুনা নদীর ভাঙন থেকে শহড়াবাড়ি ও বানিয়াজান গ্রামের আবাদি জমি ও জনবসতি রক্ষায় স্পার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ যমুনার পানি বাড়ায় শহড়াবাড়ির নৌঘাট এলাকায় ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে শহড়াবাড়ি থেকে বানিয়াজান পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশে নদীভাঙন অব্যাহত আছে।
![]() |
| শহড়াবাড়ি থেকে বানিয়াজান পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশজুড়ে নদীভাঙন অব্যাহত আছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
স্থানীয়রা ভাঙনের জন্য নদী থেকে অনিয়ম করে বালু উত্তোলনকে দায়ী করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বছরভর আইন লঙ্ঘন করে ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের শহড়াবাড়ি বাঁধ থেকে ভূতবাড়ি পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকায় অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। শহড়াবাড়ি, শিমুলবাড়ি, বথুয়ারভিটা, বৈশাখীর চর, ভান্ডারবাড়ি, ভূতবাড়ি, বানিয়াজান ও কয়াগাড়ি মৌজায় নির্বিচার বালু তোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) স্পার ও বাঁধ হুমকির মুখে।
ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, গতকাল শহড়াবাড়ি ঘাট এলাকায় অন্তত ১০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়েছে। ১০০ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন রোধে এখনই জরুরি উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
জেলা পাউবো উপসহকারী প্রকৌশলী লিটন আলী বলেন, শহড়াবাড়ি এলাকায় ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। আপাতত জিও বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন