ঈশ্বরদীতে ছাত্রদল কমিটিতে ‘বিবাহিত’ ও ‘ছাত্রলীগঘেঁষা’ নেতার পদ
| ছাত্রদল |
পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিতে বিবাহিত ও ‘নিষিদ্ধ সংগঠন’ ছাত্রলীগ থেকে আসা নেতাকর্মীরা স্থান পেয়েছেন-এমন অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা।
গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির স্বাক্ষরিত ১২ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে খালিদ বিন পার্থিবকে সভাপতি ও রিয়ামুল ইসলাম রিয়ামকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথাও জানানো হয়।
তালিকা প্রকাশের পরই শুরু হয় বিক্ষোভ। অভিযোগ ওঠে, নতুন কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক তারেক মণ্ডল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বিবাহিত। এসব কারণে ক্ষুব্ধ ছাত্রদলের একাংশ রাতেই শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। একই রাতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তাঁরা কমিটি বাতিলের দাবি জানান। বুধবার সন্ধ্যায়ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তাঁরা নবগঠিত কমিটিকে ঈশ্বরদীতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শ্রাবণ আহমেদ, প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান শান্ত ও দপ্তর সম্পাদক রোহান প্রীত আহমেদ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তব্যে উপজেলা ও কলেজ ছাত্রদলের একাংশের নেতা মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘এক প্রবীণ নেতাকে খুশি রাখতেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে যোগ্য, ত্যাগী কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি, না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইমরুল কায়েস সুমন বলেন, ‘এই কমিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাই গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন করে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া উচিত।’
নবগঠিত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মাহামুদুল ইসলাম শাওন বলেন, ‘আমি সভাপতি প্রার্থী ছিলাম, কিন্তু মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই এই মনগড়া কমিটি থেকে আমি পদত্যাগ করব।’
সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিবাহিত হওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’
উপজেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য সচিব ইমরান হোসেন সোহাগ বলেন, ‘তারেক মণ্ডল আগে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফ ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি শিরহান শরীফ তমালের সঙ্গে তাঁর ছবি সামাজিক মাধ্যমে এখনও আছে। অথচ তাঁকেই ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হুমায়ুন কবির জিহাদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বিকি আগারওয়াল ও সাবেক নেতা সোহানুর রহমান সোহান প্রমুখ।
উপজেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে নাম রয়েছে মোস্তাফিজুর রহমান বিটুর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় ৩৬ জন ত্যাগী নেতাকর্মীর নাম প্রস্তাব করেছিলাম। তাঁদের বাদ দিয়ে অযোগ্য ও বিতর্কিতদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ কারণে এই কমিটি আমরা মেনে নিচ্ছি না।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন