[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

দাদির গয়না নিতে হত্যা করেন নাতনি, আদালতে জবানবন্দি

প্রকাশঃ
অ+ অ-
নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরসভার বাসিন্দা মমতাজ বেগমকে খুন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার ফাউজিয়া খাতুনকে আজ থানা থেকে আদালতে হাজির করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় বৃদ্ধা মমতাজ বেগম (৬৯) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তার নাতনি ফাউজিয়া খাতুন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ফাউজিয়া জানিয়েছেন, দাদির শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই তিনি হত্যা করেছেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের (সুমন) কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ফাউজিয়া। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

গত রোববার রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌর এলাকার সর্দারপাড়ার নিজ বাড়িতে প্রয়াত প্রকৌশলী এস এম শফিউল্লাহর স্ত্রী মমতাজ বেগমের মরদেহ পাওয়া যায়। তার মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরদিন একমাত্র ছেলে জাকির হোসেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধার ভাশুরের নাতনি ফাউজিয়া খাতুন (১৯)কে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বনপাড়ার সর্দারপাড়ার শাহিনুজ্জামানের মেয়ে।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পরপরই খুনিকে শনাক্ত করতে পুলিশ মাঠে নামে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানতে পারে, ঘটনার সময় ফাউজিয়া নিহতের বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন। বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে গোয়েন্দা নিয়োগের পর রোববার রাতেই নাটোর শহরের হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ফাউজিয়া ও তার স্বামী মিনারুলকে আটক করা হয়। টানা চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদে ফাউজিয়া স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার জন্য দাদিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কিছু গয়নাও জব্দ করা হয়।

আজ দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফাউজিয়াকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের সামনে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। বিচারক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তিন ঘণ্টা সময় দেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তিনি নিজ খাসকামরায় জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

জবানবন্দি শেষে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ফাউজিয়া পূর্ব–আক্রোশ এবং গয়না হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে মমতাজ বেগমকে খুন করার কথা স্বীকার করেছেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ফাউজিয়ার দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারওয়ার বলেন, বাড়ির প্রহরী এশার নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে ফাউজিয়া তাঁর দাদির শোবার ঘরে ঢোকেন। এ সময় ফাউজিয়া স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে রাত্রিযাপন করতে চান। কিন্তু মমতাজ বেগম রাজি হননি। তখন ফাউজিয়া হাতে থাকা টর্চলাইট দিয়ে মমতাজ বেগমের মুখমণ্ডলে আঘাত করেন। এতে তিনি লুটিয়ে পড়েন এবং নাক ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। এরপর ফাউজিয়া দ্রুত দাদির শরীরে থাকা সাড়ে তিন ভরি সোনার গয়না খুলে নিয়ে নাটোরে চলে আসেন। নাটোরের একটি দোকানে তিনি গয়না বিক্রি করে নতুন জামাকাপড় কিনেন এবং বাসে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন