সার না পেলে ডিসি অফিস ঘেরাওয়ের আহ্বান মির্জা ফখরুলের

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ দুপুরে দানারহাট ঈদগাহ মাঠে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সার না পেলে কৃষকদের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় ঘেরাও করার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন। সদর উপজেলার দানারহাট ঈদগাহ মাঠে এ সভার আয়োজন করে বেগুনবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৩১ দফায় বলেছি, আমরা যদি সরকারে যেতে পারি, তাহলে ১৫ মাসের মধ্যে এক কোটি বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্যের নিশ্চয়তা দেব।’

সারসংকটের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন সারের সংকট চলছে। ডিসিক কইবা হবে (বলতে হবে) আপনার তো বাড়ি কিশোরগঞ্জে। ওত্তি তো (ওদিক) পানি আর পানি। হামার এত্তি (এদিক) তো পানি বেশি নাই। আমাদের কৃষিকাজ করে খেতে হয়। পানি শ্যালো বা ডিপ টিউবওয়েল আর বরেন্দ্র থেকে নিতে হয়। সারটা আমরা ঠিকমতো চাই।’

উপস্থিত জনতার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মুখ বন্ধ করে থাকলে কেউ কথা শুনবে না। যদি কথা না শোনে, সারের দাবিতে দরকার হলে ডিসি অফিস ঘেরাও করে দেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ‘ভিশন টুয়েন্টি-থার্টি’ নামে একটি প্রস্তাব জনগণের সামনে তুলে ধরেছিলেন। সেই প্রস্তাবে তিনি বলেছিলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট দরকার—যেখানে প্রতিনিধিরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন, তাঁরাই দেশ চালাবেন। এতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকবে, বিচার বিভাগও সম্পূর্ণ স্বাধীন হবে।

কয়েকটি রাজনৈতিক দল পিআর নিয়ে চিৎকার করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা বোঝেন পিআরটা কী? এখন চলছে এক ব্যক্তির এক ভোট। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আর পিআর হচ্ছে, কোনো ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেওয়া। সর্বনাশ! কাকে ভোট দিচ্ছি আমি জানব না? দলকে ভোট দিলে তো ওটা কী হবে, তাও ঠিকমতো বলতে পারব না। তবে সেই ব্যবস্থায় আমরা যাব কেন? সবাই যদি একমত হয়, তাহলে চিন্তা করে দেখা যেতে পারে। সে কারণেই আমরা বলছি, আগে নির্বাচনটা হোক। পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত হবে, জনগণ ভোট দিয়ে ঠিক করবে—পিআর হবে কি হবে না।’

দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই মিলে নির্বাচন করি। পরে তর্ক-বিতর্ক করব, কিন্তু আর মারামারি করতে চাই না রে, ভাই।’

এমপিওভুক্ত বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকেরা নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। আমরা বলছি, বিএনপি সরকার গঠন করলে শুধু শিক্ষক নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকেই জাতীয়করণ করা হবে।’

সভায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, বেগুনবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এসএস আবুল কাসেমসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।