পিআর পদ্ধতি দেশের মানুষ বোঝে না, মেনে নেবে না
![]()  | 
| বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত স্মরণসভায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন | 
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি দেশের মানুষ বোঝে না। একটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির কথা বলছে এবং এর জন্য আন্দোলন করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো নির্বাচন বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছুই তারা মেনে নেবে না।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল আলম মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ডেমোক্রেটিক লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মণির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এনপিপির চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের আহ্বায়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল পার করছি। গত ১৫ বছর একটি ফ্যাসিস্ট দল বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও আত্মাকে ধ্বংস করেছে। সেই দলের বিরুদ্ধে লড়াই শেষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সুযোগ পেয়েছি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার।' 
বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, 'তারা সব সময় সংস্কারের পক্ষে। কিন্তু প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী। এটি ভুল ধারণা। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও নিশ্চিত করেছিলেন।' 
তিনি বলেন, 'একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য পিআর পদ্ধতি সামনে এনেছে। এই পদ্ধতি সম্পর্কে জনগণের কোনো ধারণা নেই। যারা সংসদ সদস্য হয়েছেন, তাদের মধ্যেও কেউ এটি ভালোভাবে বোঝেন না। যারা সংস্কার কমিশনে আছেন, তাদেরও এটি প্রস্তাব করা হয়নি।' 
মির্জা ফখরুল বলেন, 'সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণও চায় দ্রুত নির্বাচন হোক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাক দেশ। রাতারাতি বাংলাদেশ বদলানো সম্ভব নয়, কিন্তু প্রক্রিয়াটি শুরু হোক, এটাই জনগণের প্রত্যাশা।' 
তিনি আরও বলেন, 'সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে, বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করার। কিছু মানুষ আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু একাত্তরের যুদ্ধের কারণে আমরা স্বাধীন হয়েছি। স্বাধীন হওয়ায় আজ নতুন রাষ্ট্র ও নতুন চিন্তা ভাবনার সুযোগ পেয়েছি। অনেকে পরবর্তীকালে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন। আমাদের দায়িত্ব এখন এই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।' 
স্মরণসভা সঞ্চালনা করেন এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা স্মরণসভায় বক্তব্য দেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন