[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

বাংলাদেশ ব্যাংক নকশা: পদ্মা ট্রিবিউন

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনিয়ম–দুর্নীতির জালে জড়িয়ে পড়েছিল বেশ কিছু ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)। এখন এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরেই তারা নানা সমস্যায় আছে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার পি কে হালদারের। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সাইফুল আলম এস আলম এরও একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সব মিলিয়ে এই ধরনের ৯টি এনবিএফআইয়ের নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণের বিপরীতে জামানতও খুবই কম, তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।

বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি ও পর্যালোচনা’ বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য উপদেষ্টা ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন করা হচ্ছে বলে গভর্নর জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এই ৯টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), এফএএস ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স ও প্রিমিয়ার লিজিং।

এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর ক্ষুদ্র আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে সরকারের কাছে ৫ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই ৯টি প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানত রয়েছে ১৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের টাকা ৩ হাজার ৫২৫ কোটি, আর বাকি ১১ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা জমা রেখেছে বিভিন্ন ব্যাংক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান।

ব্যক্তি আমানতকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা আটকা পড়েছে পিপলস লিজিংয়ে। এ ছাড়া আভিভা ফাইন্যান্সে ৮০৯ কোটি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ৬৪৫ কোটি এবং প্রাইম ফাইন্যান্সে ৩২৮ কোটি টাকা আটকা রয়েছে সাধারণ আমানতকারীদের।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রথমে ২০টি এনবিএফআই বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে ১১টি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। তাতে সন্তুষ্ট হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের সময় দিয়েছে।

চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৩৫টি এনবিএফআইয়ের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৩২ শতাংশ।

আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের নানা অনিয়মের প্রভাব পড়েছে পুরো খাতে। তাঁর মালিকানাধীন ও পরিচালিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। পি কে হালদার যখন এসব অনিয়ম করেন, তখন তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন আভিভা ফাইন্যান্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন। দুটি প্রতিষ্ঠানই এখন বন্ধের তালিকায় আছে।

পি কে হালদারের হাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন ধ্বংস হয়েছে, তেমনি তাঁর ঘনিষ্ঠ এস আলমের কারণে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর অবস্থাও এখন সংকটে। ফলে দেশের পুরো আর্থিক খাত আজ টালমাটাল। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন