এক মুহূর্তেই রহিমার স্বপ্ন ছাই
![]() |
পোড়া ঘরের সামনে সন্তানসহ রহিমা বেগম। আজ দুপুরে লোহাগাড়ার চুনতি রোসাইঙ্গা ঘোনা গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজের মাথা গোঁজার জায়গা নেই, সাময়িকভাবে টিনশেডের ঘরে অসুস্থ স্বামী ও সন্তান নিয়ে প্রতিবেশীর জায়গায় থাকতেন রহিমা বেগম (৩৫)। মুরগির খামারে কাজ করে তিলে তিলে ৩৭ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন, কিনেছিলেন আসবাবপত্র ও তিনটি গরু। বড় মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতিও ছিল। কিন্তু এক মুহূর্তের আগুনে সব শেষ হয়ে গেছে।
রহিমার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের রোসাইঙ্গা ঘোনা গ্রামে। বুধবার রাত তিনটার দিকে তিনি খামারে ছিলেন। ওই সময় খবর পান, বাড়িতে আগুন লেগেছে। ফিরে গিয়ে দেখেন ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
রহিমা বেগম বলেন, 'ঘরে আলমারি, খাট, চেয়ার, টেবিলসহ সব আসবাব ছিল। এগুলো সব পুড়ে গেছে। বসতবাড়ির পাশে থাকা তিনটি গরু আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত হয়েছে। বড় মেয়ের বিয়ের জন্য প্রস্তুত করা উপহারও এখন আর কিছু নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'মেয়ের বিয়ের জন্য টাকাগুলো তিলে তিলে জমিয়েছিলাম। আগুনে সব পুড়ে গেল। এখন কীভাবে চলব, কীভাবে বাঁচব কিছুই জানি না।'
স্থানীয়রা জানান, রহিমা মুরগির খামারে কাজ করে মাসে ১০ হাজার টাকা পান। এ টাকাই সংসারের যাবতীয় খরচ চালাতে হয়। এছাড়া গরু পালন করে সামান্য আয় হয়। তাঁর বড় মেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছে, এখন বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণি এবং ছোট মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আগুনে তাদের বইখাতা, ব্যাগ ও ইউনিফর্ম সব পুড়ে গেছে। বাকি দিনগুলো কীভাবে চলবে, এই চিন্তায় পরিবারটি এখন দুশ্চিন্তায়।
চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন নিশ্চিত করেছেন, 'আগুনে পরিবারটির অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।'
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির সঙ্গে দেখা করব। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন