[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বৃষ্টির মধ্যেও প্রাণবন্ত ‘ডাকঘর’, করতালিতে মুখর মিলনায়তন

প্রকাশঃ
অ+ অ-
জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটারে শুক্রবার পালাকারের ‘ডাকঘর’ নাটকের শততম মঞ্চায়ন হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

বিকেল থেকে বৃষ্টি পড়লেও, ছুটির দিনেও সন্ধ্যায় ঢাকার রাজপথে তীব্র যানজট থাকলেও শিল্পকলার স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে দর্শকরা থামেনি। কারণ, তারা এসেছিলেন এক বিশেষ সন্ধ্যার সাক্ষী হতে—পালাকারের প্রযোজনায় ‘ডাকঘর’-এর শততম মঞ্চায়ন দেখতে।

এক যুগের বেশি সময় পর মঞ্চে ফিরেছে দলটির বহুল প্রশংসিত এই প্রযোজনা। বিকেল ও সন্ধ্যায় দুটি প্রদর্শনীতেই দর্শকের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অভিনয় শেষে করতালির ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছিল পুরো মিলনায়তন।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পালাকার ধারাবাহিকভাবে মঞ্চে এনেছে নানা ধ্রুপদি ও সমকালীন প্রযোজনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ডাকঘর’ সেই যাত্রার এক উজ্জ্বল অধ্যায়। শততম প্রদর্শনীর আগে ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় হয়েছে ৯৮তম মঞ্চায়ন, পরদিন বিকেলে ৯৯তম, আর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো শততম প্রদর্শনী। এটি পালাকারের জন্য ছিল এক আবেগঘন আয়োজন। দলের প্রযোজনা পরিকল্পনা, আলো ও সংগীত আয়োজনের কাজগুলো একসঙ্গে করেছেন পুরনো ও নতুন সদস্যরা। সন্ধ্যাটা পরিণত হয়েছে এক প্রজন্মের নাট্যকর্মীদের পুনর্মিলন ও উদ্‌যাপনে।

নাটক শুরু হওয়ার আগে দর্শকদের মুঠোফোন নীরব রাখার অনুরোধ জানানো হয় একটু ভিন্নভাবে—‘রবীন্দ্রনাথের সময়ে তো মোবাইল ছিল না, কাজেই...’। মঞ্চের দুই পাশে থাকা শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন, ‘আজ ধানের খেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলা...’।

এরপর মঞ্চে আসেন মাধব দত্ত ও কবিরাজ। অমলের ভাগ্য প্রসঙ্গে কবিরাজের হতাশা, ‘ওর ভাগ্যে যদি আয়ু থাকে, তা হলে দীর্ঘকাল বাঁচতেও পারে; কিন্তু আয়ুর্বেদে যে রকম লিখছে, তাতে তো...’। মাধবের হৃদয়ভরা আকুতি, ‘কী করতে হবে, সেইটে বলে দিন।’ নাটকের কেন্দ্রে ছিল অমল—এক শিশুমন, যে অসীমের টানে মুক্তি খোঁজে। তার সঙ্গে আছে মাধব, দইওয়ালা, মোড়ল, রাজদূত—সব চরিত্রই মিশে গেছে এক প্রতীকী বুননে। মাধব ও অমল, বাস্তব আর কল্পনা—দুই সত্তার টানাপোড়েনেই গড়ে ওঠে নাটকের মূল সুর। শেষ পর্যন্ত কবিরাজের বিষবড়ি কিংবা ফুলের মালও অমলকে ধরে রাখতে পারে না। মুক্ত প্রাণের ডাকে সে পাখা মেলে দেয় অসীমে, নাটাই থেকে ছুটে যাওয়া এক স্বাধীন ঘুড়ির মতো।

পালাকারের এই প্রযোজনার নির্দেশনা দিয়েছেন শামীম সাগর। রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’কে তিনি দেখেছেন ‘অপেক্ষা ও মুক্তির সূক্ষ্ম নাট্যরূপ’ হিসেবে। তাঁর ভাষায়, ‘আমাদের ছোট্ট শরীরটার পানে বিরাট বিশ্ব-শরীরের একটা আনন্দের টান কাজ করছে সব সময়। এই পূর্ণতার আকর্ষণই জীবনের চলন।’

প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের উপস্থাপনায় ছিল নাচ ও গানের প্রাণবন্ত সংযোজন। নিজেদের মতো করে নাটকটিকে নতুন রূপ দিয়েছেন পালাকারের শিল্পীরা। এতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌসী শর্মী, চারু পিন্টু, আমিনুর রহমান, ফরহাদ লিমন, আশিকুজ্জামান প্রমুখ।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন