[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া: রোববার সারাদেশে মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা জুলাই যোদ্ধাদের

প্রকাশঃ
অ+ অ-
‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’–এর আহ্বায়ক মাসুদ রানা সাংবাদিকদের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরেছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের ১২ নম্বর ফটকে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের ‘শহীদ’ হিসেবে স্বীকৃতি, আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের সুসংগঠিত রূপরেখা এবং আহতদের জন্য আইনি সহায়তার বিষয়গুলো পূর্ণাঙ্গভাবে ‘জুলাই সনদে’ অন্তর্ভুক্ত ও বাস্তবায়নের দাবি পূরণ না হলে আগামী রোববার দেশের প্রতিটি জেলায় মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের ১২ নম্বর ফটকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন জুলাই যোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক মাসুদ রানা। এর আগে দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার ভেতরে এবং সড়কে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ রানা বলেন, 'আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আগামী রোববার বেলা দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দেশের প্রতিটি জেলা শহরের মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া সবাইকে আমরা আহ্বান জানাই—আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন। এই আন্দোলন কোনো দলের নয়, এটি জনগণের।' 

সরকার ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমরা এই রাষ্ট্রের জন্য, জাতির স্বাধীনতার নতুন স্বপ্নের জন্য জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেমেছিলাম। আমাদের রক্তের বিনিময়ে যে জুলাই সনদ তৈরি হয়েছে, সেখানে আমাদের রক্তের স্বীকৃতি থাকা উচিত ছিল। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি, আর এখন রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।' 

মাসুদ রানা জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। প্রতিটি জেলায় আহতরা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে গিয়ে দাবিনামা জমা দিয়েছেন। ১৩ অক্টোবর শাহবাগ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। এছাড়া ১৪টি মন্ত্রণালয়, সচিবালয়, এমনকি প্রধান বিচারপতি ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছেও দাবিগুলো লিখিত আকারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা আশা করেছিলাম, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন আমাদের ন্যায্য দাবি বুঝবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্যারও আমাদের দাবিগুলো দেখেছেন। তিনি কেবল একটি শব্দ নিয়ে আপত্তি করেছিলেন, আমরা সেটি সংশোধন করেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে দাবিগুলো জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কাজ করবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সনদ প্রকাশিত হলে আমরা দেখলাম—আমাদের কোনো দাবি বাস্তবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।' 

শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালানোর অভিযোগ করেছেন মাসুদ রানা। তিনি বলেন, 'আমরা সংসদ ভবনের গেটে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। প্রশাসনের কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আমরা তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিলাম, সকাল ১০টা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান থাকবে, কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না। কিন্তু সকাল হয়ে গেলে তারা কোনো আলোচনা বা সমাধানের চেষ্টা না করে হঠাৎ আমাদের ওপর আক্রমণ শুরু করে।' 

মাসুদ রানা আরও বলেন, 'পেছন দিক থেকে পুলিশ হঠাৎ লাঠিচার্জ চালায়। কেউ বুঝেও উঠার আগেই আমাদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। যারা মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন, তাদের বুট দিয়ে পাড়ানো হয়েছে। এমনভাবে আক্রমণ চালানো হয়েছে যেন আমরা মানুষ না, কোনো প্রাণী। আমাদের মধ্যে শতাধিক মানুষ আহত হয়ে নতুন করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।' 

তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ এখনো শেখ হাসিনার আমলে তৈরি হওয়া মানসিকতায় কাজ করছে। মাসুদ রানা বলেন, 'বাংলাদেশ পুলিশে এখনো ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি সদস্য সেই সময় নিয়োগ পেয়েছেন। এদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছিল—দেখার জন্য বংশে আওয়ামী লীগ আছে কি না। তাই এই বাহিনী এখনো দলীয় সংস্কৃতিতে নিমজ্জিত। জুলাই বিপ্লবের পরও তারা নিজের চরিত্র বদলায়নি। এই বাহিনী সংস্কার না হলে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।' 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন