মিরসরাইয়ের দুই বাড়িতে ডাকাতি
![]() |
| ডাকাতির পর একটি বাড়ির দৃশ্য। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একই গ্রামের দুটি বাড়িতে এক রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা চার পরিবারের পুরুষদের বেঁধে রেখে শিশু ও নারীদের জিম্মি করে টাকা, স্বর্ণালংকার, কম্বল ও মুঠোফোন লুট করে।
ঘটনা ঘটে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত উপজেলার হিঙ্গলী ইউনিয়নের একটি গ্রামে। ভুক্তভোগীরা জানান, প্রথম হানা দেয় কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে। দ্বিতল পাকা বাড়ির মূল ঘরের লাগোয়া রান্নাঘরের গ্রিল কেটে ডাকাতরা ঘরে প্রবেশ করে। প্রায় সাত থেকে আটজনের দল ছিল। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তান একা ছিলেন। ডাকাতরা প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে, সন্তানকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
এরপর ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুই ভাড়াটিয়াদের ঘরেও ডাকাতরা হানা দেয়। সেখানে তারা চার হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন লুট করে।
রাত চারটার দিকে প্রথম বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার পশ্চিমে আরেক প্রবাসীর বাড়িতে ঢোকে ডাকাতরা। একতলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক সৌদি প্রবাসীর শ্বশুর, স্ত্রী ও ছোট দুই শিশুপুত্র তখন সেখানে ছিলেন। ডাকাতরা শাবল দিয়ে সদর দরজা ভেঙে প্রবেশ করে এবং পুরুষদের হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে দুই শিশুকে হত্যা ও নারীদের ধর্ষণের হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা, সাতটি কম্বল ও একটি মুঠোফোন লুট করে। ২২ মিনিটের মধ্যে তারা নির্বিঘ্নে চলে যায়।
ডাকাতির শিকার এক প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, 'রাত দেড়টার দিকে রান্নাঘরের জানালা ভেঙে ডাকাতরা ঘরে ঢুকে পড়েছিল। তাদের পরনে হাফপ্যান্ট ও কালো মুখোশ ছিল। সবার হাতে দেশি ধারালো অস্ত্র ছিল। তারা আমাকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেয় এবং আমার ছেলেকে মারধর করে।' এরপর তারা দ্বিতীয় তলায় দুই ভাড়াটিয়াদের ঘরেও হানা দেয়।
ডাকাতির শিকার আরেক বাড়ির প্রবাসীর শ্বশুর বলেন, 'মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকায় একাই বাড়িতে সবার দেখভাল করছিলাম। বুধবার ভোর চারটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙে সাত–আটজন ডাকাত ঢুকে দেশি অস্ত্রের মুখে আমাকে বেঁধে ফেলে। এরপর তারা আমার মেয়েকে ধর্ষণ ও দুই নাতিকে হত্যার হুমকি দেয়। এ সময় ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা, সাতটি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়। মাত্র ২২ মিনিটে ঘরের ভেতর তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় তারা।'
দুই বাড়ির চারটি পরিবারে ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ওসি এম আবদুল হালিম বলেন, 'বুধবার রাতে হিঙ্গুলী ইউনিয়নের এক বাড়িতে গ্রিল কেটে ও আরেক বাড়িতে দরজা ভেঙে ডাকাতি বা চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনার তদন্ত চলছে। গ্রামের অবস্থান ফেনী নদীর পাড়ে হওয়ায় মনে করা হচ্ছে, নদীর উত্তর পাশে ছাগলনাইয়া উপজেলার সমিতির বাজার এলাকা থেকে ডাকাতরা শেষ রাতে এখানে হানা দিয়েছে।'

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন