স্বজনদের ফিরিয়ে দিন, না পারলে গুমের বিচার করুন
![]() |
| গুমের ঘটনাগুলোর দ্রুত তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়ায় অগ্রগতির দাবিতে মায়ের ডাকের মানববন্ধন। মঙ্গলবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–সংলগ্ন হাইকোর্ট ভবনের প্রধান গেটের সামনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ছাত্রদল নেতা সেলিম রেজা পিন্টু গুম হওয়ার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও তাঁর কোনো খোঁজ নেই। তাঁর বোন রেহানা পারুল বলেন, ভাই কোথায় তা তারা জানতে চান। গুম কমিশন ও ট্রাইব্যুনাল কেন কিছু বলছে না—তারও উত্তর চান তিনি।
আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার দাবি জানানো হয়। পিন্টুর বোন রেহানা পারুল এ সময় বক্তব্য রাখেন।
গুমের শিকার খালেদ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা শারমিন সুলতানা বলেন, ‘এক যুগ ধরে ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়েছি। গুম কমিশনও আছে। কিন্তু তারা আমাদের কোনো খবর দেয় না।’ তিনি আরও বলেন, তিনি চান না তাঁর সন্তান রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বাবার খোঁজ চাবে। এই বিচার প্রহসনের মতো হয়েছে। যাঁরা জড়িত, তাদের আলাদা করে রাখা হচ্ছে, বৈষম্য এখনও রয়ে গেছে।
আদিবা ইসলামের ছোট ভাই জানায়, তিনি বাবার মুখ দেখেননি, কেমন ছিলেন তা জানে না। আদিবা বলেন, এইভাবে দাঁড়িয়ে তারা ক্লান্ত। তারা বাবাকে ফেরত চাইছে। ফেরত না দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচার চাইবে, কিন্তু তা–ও হচ্ছে না।
শাহরিয়ার কবির রাতুলের বাবা ও দাদা একসঙ্গে গুম হয়েছেন। তিনি বলেন, বাবার নাম লিখতে গেলে জানেন না কী লিখবেন, বাবা মৃত নাকি জীবিত তা জানেন না। দেশে কি তাঁকে এ উত্তর দেওয়া হবে? শাহরিয়ার কবির বলেন, গুম কমিশন এখন পর্যন্ত অন্ধকারে রেখেছে। যাঁরা ফিরে এসেছেন, তাঁদের নিয়েই তারা ব্যস্ত।
গুমের শিকার কাজী ফরহাদের স্বজন আমানুল হক আমান বলেন, স্বাধীনতার পরও তাঁদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। তারা সংখ্যা জানতে চায় না। গুম কমিশন শুধু যাদের ফিরে এসেছে, তাঁদের কথা বলছে; যারা ফিরে আসেনি, তাদের কথা বলা হচ্ছে না।
মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম বলেন, গুমের শিকার পরিবারগুলোর দাবি আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কাছে যাচ্ছে না। সরকারের মধ্যে এখনও অপশক্তি রয়ে গেছে। সব তথ্য জানাতে এখনও বাধা দেওয়া হচ্ছে। গুম কমিশন ও ট্রাইব্যুনাল আছে। তারা গুমের মাত্র দুটি ঘটনায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে। তবে অভিযুক্তদের সেনানিবাসে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। এই কারণে পরিবারগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিচারের দাবি করছে। তারা সবার খোঁজ জানতে চায়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল মালেক বলেন, গত ১৫ বছরে কোনো ন্যায়বিচার হয়নি। এই পরিবারগুলো কেন এখনও ন্যায়বিচার পাচ্ছে না?


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন