ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দোকান উচ্ছেদ অভিযান বন্ধে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
![]()  | 
| ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটের দোকানঘর উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন। শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন | 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটের দোকানঘর উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে ‘জেলার সর্বস্তরের ওষুধ ব্যবসায়ী’ ব্যানারে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতা–কর্মীসহ জেলার ওষুধ ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি কুতুব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ব্যবসায়ী নূর আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী খোকন খান, সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সানাউল হক ভূঁইয়া, সহসভাপতি এইচ এম মুরাদ প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে তাঁরা হাসপাতাল সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটের দোকানগুলো চুক্তিনামা অনুযায়ী বৈধ। ১৯৮৪ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দোকানের বিষয়ে পৃথক চুক্তি হয়। প্রত্যেক দোকানের জন্য তৎকালীন ২৮ হাজার টাকায় চুক্তি হয়েছিল। তাঁরা দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে সেখানে ওষুধের ব্যবসা করছেন। নিয়মিত দোকানের ভাড়া পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু দুই মাস ধরে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের ভাড়া নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাঁরা তখন বিষয়টি বুঝতে পারেননি, কারণ কর্তৃপক্ষ দুই মাস পরপর ভাড়া নেয়। কিন্তু এবার ভাড়া বন্ধ করে হঠাৎ দোকান উচ্ছেদের কথা বলেছে। অথচ চুক্তি অনুযায়ী অন্তত ছয় মাস আগে নোটিশ দিতে হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা না করেই হঠাৎ উচ্ছেদের কথা বলছে। বক্তারা অবিলম্বে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ ও সমস্যার ন্যায়সংগত সমাধান চান।
এদিকে গত বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের সামনের এলাকা থেকে বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ, সীমানাপ্রাচীর ও দৃষ্টিনন্দন ফটক নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অবৈধ দোকানপাট বলে উল্লেখ করে দ্রুত অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে অধ্যক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন।
ওই বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, কলেজ-সংলগ্ন স্থানে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও কলেজের সামনে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানপাট দিন দিন বাড়ছে। কলেজের ফটক দিয়ে আসা–যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা এসব দোকান ও স্থাপনা শিক্ষার্থীদের চলাচলে বাধা তৈরি করছে। তাঁরা দ্রুত এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে দৃষ্টিনন্দন ফটক ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের দাবি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল হান্নান খন্দকার বলেন, 'শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো অযৌক্তিক নয়। তাঁদের দাবির পক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংস্থাপন থেকে একাধিকবার চিঠি এসেছে। কলেজের সীমানাপ্রাচীর ও ফটক নির্মাণের জন্য আগেও বরাদ্দ এসেছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় সেই টাকা ফেরত গেছে। এখন আবার নতুন করে বরাদ্দ এসেছে।' 
অধ্যক্ষ বলেন, 'কলেজের জায়গা ও সামনের দোকানগুলো ১ নম্বর খাস-খতিয়ানের জায়গা, যা সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি সম্পত্তি। সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে এসব কিছু চলতে পারে না। এবার তাঁরা সীমানাপ্রাচীর ও ফটক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। বরাদ্দের টাকা যেন আবার ফেরত না যায়, সে কারণেই শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি করেছেন। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জায়গায় দোকানপাট বা ব্যবসা থাকতে পারে না।' 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন