[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা: কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল

প্রকাশঃ
অ+ অ-
বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে দেওয়া ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমত সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই ঐক্যের পরিচায়ক হতে পারে না। তাঁর প্রশ্ন, 'তাহলে এই কমিশন করা হয়েছিল কেন?' তিনি বলেন, 'এটা জনগণের সঙ্গে একটা প্রতারণা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও প্রতারণা।' 

বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, 'এত বড় একটি অভ্যুত্থান, এত ত্যাগ আর প্রাণহানির পরও আমরা সেটাকে জাতির কল্যাণে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। বরং যত সময় যাচ্ছে, বিভক্তি আরও বাড়ছে। কারা এই বিভক্তি তৈরি করছে, কেন করছে, সেটি বুঝতে হবে।'

মির্জা ফখরুলের মতে, মিডিয়ায়-বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে- বিভিন্ন পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমে পড়ছে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা দেয়। সে প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, 'যে বিষয়গুলোতে তাঁরা একমত ছিলেন না, সেখানে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। কমিশন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ওই ভিন্নমতগুলোও সুপারিশে উল্লেখ থাকবে। কিন্তু দেখা গেল, সেই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা তো ঐক্য নয়।' 

তিনি আবারও বলেন, 'এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রতারণা।' 

অন্তর্বর্তীকালীন এই সময়কে ঐক্যের সময় বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'ন্যূনতম কিছু বিষয়ে একমত হয়ে সামনে এগোনোর কথা ছিল। কিন্তু সেই জায়গাতেই বিভক্তি তৈরি করা হচ্ছে।' 

তিনি আরও বলেন, 'সব সংকটের মূলে আছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটে গঠিত সংসদই সংবিধানের কাঠামোয় সমস্যাগুলোর সমাধান করবে। এজন্যই আমরা ৫ আগস্টের বিপ্লবের পরই নির্বাচনের কথা বলেছিলাম। তখন অনেকে বলেছিল, আমরা ক্ষমতা চাই। এখন দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন যত বিলম্বিত হচ্ছে, ততই ফ্যাসিস্ট শক্তি আরও জোরদার হচ্ছে।' 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আপনি জনগণের সামনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখনই সংস্কারের সময়। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। যদি তা না হয়, তার দায় আপনাকেই নিতে হবে—এ কথা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই।' 

অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, 'গতকাল সুপারিশে দেখে অবাক হয়েছি—নোট অব ডিসেন্টের উল্লেখই নেই। তাহলে এটা কীভাবে ঐকমত্য হলো? কমিশনকে ব্যাখ্যা দিতে হবে।' 

তিনি বলেন, 'আমরা জুলাই সনদে সই করেছি। সেখানে আপত্তির কথা লেখা আছে। প্রতিটি দল নিজ নিজ ইশতেহারে সেটি উল্লেখ করবে। যে দল নির্বাচনে ম্যান্ডেট পাবে, তারাই সেই আপত্তির অংশ মীমাংসা করবে।' 

জুলাই সনদের আদেশ জারি প্রসঙ্গে সাকি বলেন, 'অনেকে বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা আদেশ দেবেন। প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি কোন ক্ষমতাবলে দেবেন? সরকার যে আদেশ দেয়, সেটা রাষ্ট্রপতির নামে জারি হয়। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রতীক। যদি প্রধান উপদেষ্টা নিজে আদেশ দেন, তাহলে তিনি নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণা করছেন-অর্থাৎ কার্যত সংবিধান স্থগিত করছেন।' 

তিনি সতর্ক করে বলেন, 'ঐকমত্য ছাড়া কেউ কারও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে তা কার্যকর হবে না-এটা সবারই বুঝতে হবে।' 

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চর্চা ডটকমের সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক ও লেখক-সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন