[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

দুর্গাপূজায় বড় অঘটন হয়নি, সরকারের পদক্ষেপে আয়োজকদের মধ্যে আতঙ্ক

প্রকাশঃ
অ+ অ-
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ সংবাদ সম্মেলন হয়। আজ সোমবার সকালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসাহ–উদ্দীপনায় উদ্‌যাপিত হলেও কিছু প্রতিমার অবয়বে অশুভশক্তির প্রকাশ বা অসচেতনতার কারণে সরকারের আইনি পদক্ষেপ পূজার আয়োজক ও প্রতিমাশিল্পীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ।

আজ সোমবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সহসভাপতি গোপাল চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখ।

বাসুদেব ধর বলেন, সারা দেশে এবারের পূজা অত্যন্ত সুন্দরভাবে উদ্‌যাপিত হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের পাশে ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোরও সহযোগিতা পেয়েছেন। দেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারাকে এবারের উৎসব বহন করেছে।

দুর্গোৎসব শুরুর আগে অন্তত ১৪টি জেলায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বাসুদেব ধর জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের কারণে কয়েকটি স্থানে দুর্বৃত্তরা ধরা পড়ে। পূজার পাঁচ দিন দেশের কোথাও বড় ধরনের কোনো অঘটনের খবর পাওয়া যায়নি। সরকারের কঠোর অবস্থান এবং সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সতর্ক ভূমিকা এই ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

তবে বাসুদেব ধর বলেন, পূজা ‘সুন্দরভাবে’ হলেও কিছু প্রতিমার অবয়বে অশুভশক্তির প্রকাশ বা অসচেতনতার কারণে সরকারের পদক্ষেপে আয়োজক ও প্রতিমাশিল্পীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

‘প্রতিমায় যে অবয়ব প্রকাশের কথা বলা হচ্ছে, তা নতুন বা হঠাৎ এ বছরই হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। অতীতে অনেক প্রতিমায় তা শিল্পী বা অয়োজকেরা নানাভাবে প্রকাশ করেছেন। এবার কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।
বাসুদেব ধর, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি

বাসুদেব ধর বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ৫ অক্টোবর “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত” হানার অজুহাতে শিল্পী, পূজারি ও আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। থানায় সাধারণ ডায়েরি ও সরকারি তদন্তের কথাও বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যের পর আয়োজক ও প্রতিমাশিল্পীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, যা ভবিষ্যতে অন্য কোনো পূজা-পার্বণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বিষয়টি নজরে আনার পর সম্ভাব্য সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে মিলে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে উৎসবে কোনো ভাটা পড়েনি। কিন্তু পূজা শেষ হওয়ার পর বিষয়টি ভিন্নভাবে প্রচার করার চেষ্টা হচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উৎসাহিত করতে পারে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হয়রানি ও নিপীড়নের মুখে পড়তে পারে। একই সঙ্গে একযোগে কাজ করার যে ধারা তৈরি হয়েছে, তা হঠাৎ ধাক্কা খেতে পারে।’

বাসুদেব ধর বলেন, ‘প্রতিমায় যে অবয়ব প্রকাশের কথা বলা হচ্ছে, তা নতুন নয়। অতীতে অনেক প্রতিমায় শিল্পী ও আয়োজকেরা নানাভাবে প্রকাশ করেছেন। এবারও কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়নি।’

তিনি আরও জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস নিয়ে ‘অস্বীকারের রাজনীতি’ চলছে। দুঃখজনক হলেও, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরও এ ধারা চলছেই। বাস্তবতা এড়িয়ে সমস্যা সমাধান হবে না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৫৪ বছরে হিন্দু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ১৮ শতাংশ থেকে কমে ৮ শতাংশে নেমে গেছে।’

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন