[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বই ছাপার কাজ এনসিটিবির বদলে অধিদপ্তরকে দিলে সমস্যার সমাধান হবে না: টিআইবি

প্রকাশঃ
অ+ অ-
 
অন্তর্বর্তী সরকার প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পরিবর্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মনে করছে, এতে সমস্যার সমাধান হবে না।

টিআইবি রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, এনসিটিবির সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের পরিবর্তে ‘মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলা’র মতো এই উদ্যোগ বিদ্যমান সমস্যার সমাধান সম্ভব করবে না। এতে কেবল এনসিটিবি দুর্বল হবে, লক্ষ্য অর্জনে কোনো গুণগত পরিবর্তন আসবে না এবং এক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হবে।

টিআইবি সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন থেকে বিতরণ পর্যন্ত সার্বিক কার্যক্রমে বিদ্যমান দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে স্বায়ত্তশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতের উদ্যোগ নিতে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এনসিটিবি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, মুদ্রণ, প্রকাশনা, বিতরণ ও বিপণনের দায়িত্ব পালন করে আসছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে বছরের শুরুতে বিনা মূল্যে বই বিতরণও করা হয়। তবে এনসিটিবির বিরুদ্ধে সময়মতো বই সরবরাহে ব্যর্থতা, মান নিয়ে প্রশ্ন এবং কাজের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে ২০২২ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ আলাদাভাবে বই ছাপার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। বর্তমানে সেই চেষ্টা বাস্তব রূপ পাচ্ছে। প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই এনসিটিবির পরিবর্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এনসিটিবি আইন সংশোধন করে এ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

তবে এনসিটিবির কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আলাদাভাবে বই ছাপার উদ্যোগে সংকট ও সমন্বয়হীনতা আরও বাড়তে পারে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কেউ কেউ এই উদ্যোগকে ‘বাজে’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, এনসিটিবিকে শক্তিশালী না করে ভেঙে দিলে শিক্ষার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে টিআইবি বিবৃতি দিয়েছে। নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, এনসিটিবির বাস্তব স্বায়ত্তশাসন ও সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিকেন্দ্রীকরণের নামে অস্থায়ী উদ্যোগ কোনো ফল দেবে না। বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে প্রাথমিক স্তরের বই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণের উদ্যোগ এনসিটিবিকে দুর্বল করবে এবং লক্ষ্য অর্জনে কোনো উন্নতি আনবে না। সুশাসনের ঘাটতি ও অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিকার ও প্রতিরোধের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিতে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে আলাদাভাবে বই ছাপার দায়িত্ব দিলে সংকট ও সমন্বয়হীনতা বাড়বে। বিকেন্দ্রীকরণের কারণে দুটি সংস্থা থাকলেও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন না থাকলে সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হবে না।

সময়সীমার মধ্যে বই সরবরাহে ব্যর্থতা, মানের সমস্যা ও কাজের সমন্বয়হীনতার দায় কেবল এনসিটিবির ওপর চাপানো হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর দায় এড়াতে পারবে কি না, তা প্রশ্নবিদ্ধ। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানের ভেতরের দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বায়ত্তশাসনের পথে প্রতিবন্ধকতার কারণে এনসিটিবি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, দরপত্র, মুদ্রণ, প্রকাশ ও বিতরণে এনসিটিবিকে সম্পূর্ণ স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া উচিত। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির ব্যর্থতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণ অনুসন্ধান করে দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন