আড়াইহাজারে এবার ‘ডাকাত সন্দেহে’ যুবককে পিটিয়ে হত্যা
মরদেহ | প্রতীকী ছবি |
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ডাকাত সন্দেহে নবী হোসেন (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের দড়ি বিশনন্দী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতদের হামলায় চারজন আহত হয়েছেন।
নিহত নবী হোসেনের বাড়ি একই উপজেলার উচিৎপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম আগুকান্দি গ্রামে। আহতদের মধ্যে আছেন দড়ি বিশনন্দী গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার স্ত্রী কুলসুম বেগম (৪০), ছেলে নাঈম মিয়া (১৮), তাঁদের আত্মীয় আবুল হোসেন ও ফারুক মিয়া (৪৫)। কুলসুমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, রাত আড়াইটার দিকে কয়েকজন ডাকাত দড়ি বিশনন্দীর একটি বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করে। বাড়ির লোকজন চিৎকার করলে আশপাশের মানুষ ছুটে আসে। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হলে গ্রামবাসী ডাকাতদের খুঁজতে বের হয়।
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুদ্দিন বলেন, রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির পানি যাতে রান্নাঘরের চুলা ভিজে না যায়, সে জন্য গৃহিণী কুলসুম বেগম বাইরে যান। তখন তিনি তিন-চারজন অচেনা লোক দেখে ডাকাত-ডাকাত বলে চিৎকার করেন। পরে ডাকাতেরা তাঁকে ও আরও তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে। রাত তিনটার দিকে মাইকে ঘোষণার পর গ্রামবাসী চারদিকে খুঁজতে থাকে। এ সময় একটি বিলের মধ্যে নবী হোসেনকে ধরে পেটানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, নবীর বিরুদ্ধে আগে কোনো অপরাধমূলক তথ্য পাওয়া যায়নি। বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত লাশ আড়াইহাজার থানায় রাখা ছিল। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। নিহত নবীর পরিবারের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। ঘটনাটি নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত এক মাসে আড়াইহাজারে আরও দুজনকে একইভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গত সোমবার সকালে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সোহেলকে চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে হত্যা করা হয়। তবে তাঁর পরিবার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, মাদকবিরোধী অবস্থানের কারণে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য, সোহেলের বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিসহ অন্তত ১৫টি মামলা ছিল।
গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের প্রভারকরদী গ্রামে আয়নাল হোসেন (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে ডাকাতির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তখন পুলিশ জানিয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতি ও ধর্ষণসহ অন্তত আটটি মামলা রয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন