[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

গঙ্গা, মহাদেব, দুর্গা-বাইশ পুতুলে সবার সমাবেশ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে চলছে সিঁদুর খেলা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বারোঘরিয়া সার্বজনীন বাইশ পুতুল দূর্গা মন্দিরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত বারঘরিয়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী ‘বাইশ পুতুল’ দুর্গাপূজা উদযাপন হচ্ছে। এ বছর পূজার ৩২০তম বর্ষ পালিত হলো।

ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর বন্দনা দিয়ে শুরু হওয়া পূজামণ্ডপে ভিড় করে দূর-দূরান্ত থেকে আগত শত শত পূণ্যার্থী-দর্শনার্থী। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা সিঁদুর খেলা ও পূজার আনন্দে মেতে উঠে। বিজয়া দশমীতে সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় মহানন্দা নদীতে।

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের কাঞ্চনতলা জমিদারবাড়ি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের বারঘরিয়া-এই দুই স্থানে ‘বাইশ পুতুল’ দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে অন্য কোথাও এমন পূজা দেখা যায় না।

দর্শনার্থী বিকাশ সিংহ জানান, 'এই পূজায় মোট বাইশটি প্রতিমা থাকে। সবার ওপরে গঙ্গা দেবী, তার নিচে গাড়ির ওপর সাপ জড়ানো মহাদেব, পাশে নন্দি–বন্দি, রাম–লক্ষ্মণ। মাঝখানে দেবী দুর্গা এবং আরও আছেন কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী—সঙ্গে তাঁদের বাহন ইঁদুর, ময়ূর, প্যাঁচা ও সাদা হাঁস। প্রতিমার এই অনন্য বিন্যাসই ‘বাইশ পুতুল পূজা’র বিশেষ আকর্ষণ।' 

প্রবীণ ব্যক্তি বিরেন কুমার বলেন, 'প্রায় ৩০০ বছর আগে এই পূজা গোমস্তাপুর উপজেলার শুক্রবাড়ি গ্রামে শুরু হয়েছিল। পরে কোনো কারণে পূজার কাঠের পাঠ মহানন্দা নদীতে ভেসে আসে। পাঠ এসে ঠেকা স্থানে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সহায়তায় জমি কিনে বারঘরিয়ায় পূজা প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন থেকেই এখানে পূজার আয়োজন অব্যাহত রয়েছে।'

এ বছর প্রতিমাগুলো সাদা রঙে রঞ্জিত করা হয়েছে, যা দর্শনার্থীদের আনন্দ বাড়িয়েছে। শাহজাহানপুর গ্রামের সুব্রত কুমার বলেন, 'প্রতি বছর পরিবার নিয়ে আমরা এখানে আসি। এই পূজা না দেখলে আমাদের দুর্গোৎসব অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এমন প্রতিমা আর কোথাও দেখা যায় না।' 

মণ্ডপে সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধা সবাই সিঁদুর খেলা উপভোগ করছেন। কিশোরী লক্ষী রানী বলেন, 'সারা বছর এ দিনের অপেক্ষায় থাকি। প্রতিমার সামনে দাঁড়িয়ে সিঁদুরে আপনজনকে রাঙানোই আমাদের সবচেয়ে বড় আনন্দ।' 

বারঘরিয়া সার্বজনীন বাইশ পুতুল দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি প্রণব কুমার পাল জানান, 'এ বছর খরচ বেড়েছে, কিন্তু দান কম এসেছে। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির কারণে দূরের দর্শনার্থীর সংখ্যা কমেছে। আগে এখানে বিরাট মেলা বসত, যাত্রাপালা ও নাটক হতো। এখন জায়গা কমে যাওয়ায় মেলা আর জমে না।' 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন