[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

আজ বিজয়া দশমী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীকে বিদায়

প্রকাশঃ
অ+ অ-

কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হয় নবমীর আনুষ্ঠানিকতা। পূজা শেষে ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি নিবেদন করেন। গতকাল রাজধানী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ভক্তদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

মহা ধুমধামে অঞ্জলি, আরতি ও পূজা–অর্চনার মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আজ সকালে অনুষ্ঠিত হবে দশমী বিহিত পূজা। এরপর দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবের সমাপ্তি হবে। গত রোববার শুরু হয়েছিল দেবীর পূজা।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ জানিয়েছেন, রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দশমীর পূজা শুরু হবে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে। দর্পণ বিসর্জনের পরে দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচি। প্রতিবছরই বিজয়ার দিনে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে স্বেচ্ছা রক্তদানের আয়োজন থাকে।

বিজয়ার শোভাযাত্রা শুরু হবে বেলা ৩টায়। এর আগে মহানগরের বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে প্রতিমা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আনা হবে। সন্ধ্যায় বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটে প্রতিমা বিসর্জন হবে। এবারের দেবীর আগমন হয়েছে গজে, আর দোলায় গমন।

সিঁদুরখেলা
বিজয়া দশমীতে দশমী বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জনের পরে অনেক মন্দিরে সিঁদুরখেলার আয়োজন থাকবে। সাধারণত বিবাহিত নারীরা দেবীর চরণে সিঁদুর দান করে তা সারা বছর ব্যবহার করার জন্য কৌটায় রাখেন। এই সময় তাঁরা একে অপরের কপাল ও চিবুকে দেবীর চরণ স্পর্শ করে সিঁদুর লাগান। সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, বনানী মণ্ডপ, ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মণ্ডপে এই আয়োজন হবে।

গতকাল মহানবমীতে রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলো ঢাকঢোলের বাদ্যতে মুখর হয়ে ওঠে। নবমী উদযাপনে দেবী দুর্গা তীব্র লড়াই করে অসুর বিনাশ করেন। নবমীর প্রধান ধর্মীয় আচার হলো দেবীকে অঞ্জলি নিবেদন। রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপে ভক্তরা ফুল হাতে দেবীর পদে অঞ্জলি প্রদান করেন।

বনানী পূজামণ্ডপে সকাল থেকেই ছিল ভক্তদের সমাগম। আহ্বায়ক চন্দন লোধ জানান, সকাল ৯টা থেকে নবমী বিহিত যজ্ঞ ও পূজা শুরু হয়েছিল। দুপুর সোয়া ১২টা থেকে অঞ্জলি দেওয়া শুরু হয়। ভক্তরা মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে দেবীকে প্রণাম দেন ও চরণামৃত সংগ্রহ করেন।

মানিকগঞ্জের যাদব চন্দ্র ঘোষ ও স্ত্রী অর্চনা রানি ঘোষ বলেন, বনানী পূজার আয়োজন জাঁকজমকপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য। সারা বছর এই আনন্দের জন্য তারা অপেক্ষা করেন। গুলশানের অসীম গুহ ও রুপা গুহ বলেন, বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন করেছেন। বনানীর মণ্ডপ বর্ণনা, পরিসর ও নিরাপত্তার দিক থেকে সবচেয়ে ভালো। তবে সাধারণ মানুষের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে উৎসবের আনন্দে কিছুটা ঘাটতি আছে।

বনানী পূজামণ্ডপে এবার পুরো সাজসজ্জা পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে করা হয়েছে। প্রতিমায় কোনো কৃত্রিম বস্ত্র বা অলংকার ব্যবহার হয়নি। মাটির তৈরি প্রতিমায় প্রধানত সাদা রঙ ব্যবহার করা হয়েছে, হালকা গোলাপি আভা ও রুপালি অস্ত্র-অলংকারের মাধ্যমে বিশেষ স্নিগ্ধতা এসেছে। ফটক ও ভেতরের সাজসজ্জায় পাটি, বাঁশ, বেত ব্যবহার করে লোকজ নকশায় অলংকরণ করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত মণ্ডপ খেলা চলে। প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার ভক্ত দেবীদর্শনে আসেন।

ষষ্ঠীপূজার দিন থেকেই বনানী মণ্ডপে প্রসাদ বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার জনকে প্রসাদ দেওয়া হয়। নবমীর বিকেলে পূজা ও শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠ শুরু হয়, সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় এবং রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আরতি অনুষ্ঠিত হয়।

বনানী, গুলশান ও উত্তরা এলাকার প্রায় ৩০টি প্রতিমা আশুলিয়ায় বিসর্জন দেওয়া হবে। দশমীর পূজা শেষে বিজয়ার শোভাযাত্রা শুরু হবে বেলা ৩টার পর।

ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মাঠে সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের আয়োজনে ৩৪ বছর ধরে দুর্গাপূজা হচ্ছে। নবমীতে প্রায় ১০ হাজার ভক্ত দেবীকে অঞ্জলি দেন। প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ হাজার জনকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন