[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

কি কারণে রাকসু নির্বাচনে ভরাডুবি ছাত্রদলের?

প্রকাশঃ
অ+ অ-
রাকসু নির্বাচনে বৃহস্পতিবার ভোট দেওয়ার চিহ্ন হিসেবে হাতের কালি দেখাচ্ছেন এক শিক্ষার্থীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের। ২৩টি পদের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছেন ছাত্রদলের প্রার্থী। ১৭টি হল সংসদের শীর্ষ ৫১টি পদে কোনো প্রার্থীই জয় পাননি। সিনেটের পাঁচটি ছাত্র প্রতিনিধি পদের একটিতেও তাঁরা নির্বাচিত হতে পারেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনেও একই পরিণতির মুখে পড়ল ছাত্রদল।

রাকসুতে ছাত্রদলের এমন পরাজয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তারা ক্যাম্পাসে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম চালাতে পারেননি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর নিয়মিত কর্মকাণ্ড শুরু করলেও সংগঠনটি নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারেনি। বরং সংগঠনের ভেতরেই ‘গ্রুপিং’ বা অন্তঃকোন্দল দেখা দিয়েছে।

এবারের নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলের বাইরে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদক মেহেদী হাসান। এ কারণে নির্বাচনের আগের দিন, গত বুধবার, তাঁকে সংগঠন থেকে আজীবন বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

গত এক বছরে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছে। তারপরও কেন এমন হলো, তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
সুলতান আহমেদ, সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ততা কম ছিল ছাত্রদলের
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা কৌশলে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিচয়ে ক্যাম্পাসে ছিলেন ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের একটা সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ছাত্রদলের তেমন সংযোগ গড়ে ওঠেনি।

ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি শেখ নূর উদ্দীন (আবীর)। রাকসুর ফলাফলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হয়তো আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে সেভাবে পৌঁছাতে পারিনি, আমাদের ভাবনা তাদের বোঝাতে পারিনি। ফলাফল যা-ই হোক, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাব।’

আওয়ামী লীগ আমলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য ছিল। ক্যাম্পাসে অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনকে কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হয়নি। হলে সিট-বাণিজ্য, শিক্ষার্থী নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ ছিল সংগঠনটির বিরুদ্ধে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর এসব কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মনে করেন, রাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল জিতলে ক্যাম্পাসের বর্তমান শান্ত পরিবেশ নষ্ট হতে পারে—এমন প্রচারণা প্রতিপক্ষ ছড়িয়েছে। এতে নির্বাচনে ছাত্রদল কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগও রাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলকে ভোগাতে হয়েছে।

নির্বাচন পেছানোর অভিযোগও ছিল
আরেকটি কারণ শিক্ষার্থীদের আলোচনায় এসেছে—রাকসু নির্বাচন আয়োজনের শুরুতেই ছাত্রদলের ভেতরে ছিল অনীহা। এমন অভিযোগও আছে, নির্বাচন পেছাতে নানা চেষ্টা করেছিল তারা। ছাত্রদল ও বিএনপিপন্থী কিছু শিক্ষকও এতে ভূমিকা রেখেছিলেন। এক দফা নির্বাচন পেছানো হয়, যা শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেয়নি। এর প্রভাবও পড়েছে নির্বাচনের ফলে।

রাকসুতে এমন পরাজয়ের বিষয়ে শিগগিরই আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ। তিনি বলেন, গত এক বছরে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছে। তারপরও কেন এমন হলো, তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীদের মতামতকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁরা ফলাফল মেনে নিয়েছেন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন