ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের ছাদে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, পড়ে নিহত পল্লী বিদ্যুৎ কর্মী
এআই দিয়ে তৈরি প্রতীকী ছবি |
ভ্রমণে যাওয়ার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে রেজাউল করিম নামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার মুকুন্দপুর কামারপাড়া রেললাইনের পাশ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ।
নিহত রেজাউল করিম (২৮) কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের মইনপুর গ্রামের মো. জুরুল মিয়ার ছেলে। তিনি কুমিল্লার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এ ওয়ার্কশপ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে সিলেটের শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে যাচ্ছিলেন। রেজাউল করিমের পরিবার ও সহকর্মীরা দাবি করেন, চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ছিনতাইকারী তাঁকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন থেকে কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন রেজাউল। সে সময় সঙ্গে রিফাত মিয়া (২৬), ইমাম হোসেন (৩০) ও আবদুল মান্নান (২৫) নামে তাঁর তিন সহকর্মী ছিলেন। তবে ট্রেনের ভেতরে টিকিট না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা ছাদে উঠে যাত্রা করেন। ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশন অতিক্রম করার পর সংঘবদ্ধ ১০ থেকে ১২ জনের একটি ছিনতাইকারী দল তাঁদের ওপর হামলা চালায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে চলন্ত ট্রেন থেকে নিচে পড়লে ঘটনাস্থলেই রেজাউলের মৃত্যু হয়।
রেজাউলের সঙ্গে আহত ইমাম হোসেন, রিফাত মিয়া ও আবদুল মান্নান জানান, আখাউড়া রেলস্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পর তাঁদের ওপর ট্রেনের ছাদে আট থেকে দশজন ছিনতাইকারী হামলা চালায়। এ সময় ছিনতাইকারীরা তাঁদের মুঠোফোন, নগদ টাকা ও কাপড়চোপড় ছিনিয়ে নিয়ে যান। ছিনতাইকারীরা একপর্যায়ে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে রেজাউলকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত রেজাউলের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ মামুনের অভিযোগ, ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হওয়ার অনেক পরে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ ও বিজয়নগর উপজেলার মুকুন্দপুর স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দ্রুত চিকিৎসা পেলে হয়তো রেজাউলকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত ব্যক্তির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, চলন্ত ট্রেনের ছাদে ছিনতাইকারীরা ধাক্কা দেওয়ায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা এখনো জানা যায়নি, ছিনতাইকারীরা ফেলে দিয়েছে নাকি অসাবধানতায় পড়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন