রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ, আইনি নোটিশ পাঠালেন প্রার্থী
![]() |
| রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় | ফাইল ছবি |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক প্রার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া রোববার আইনজীবীর মাধ্যমে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগকারী রাহাত ইসলাম হৃদয় নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে যথাক্রমে ৩.৬৩ ও ৩.৮৬ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন।
১৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন রাহাত। তবে তিনি মৌখিক পরীক্ষার জন্য মনোনীত হননি। তাঁর অভিযোগ, নিয়োগ পরীক্ষার আগে তাকে অর্থ প্রদানের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। তিনি তা দিতে অস্বীকার করলে মৌখিক পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়া হয়নি।
রাহাত ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবকে লিখিত অভিযোগ দেন। একই সঙ্গে অভিযোগের কপি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠানো হয়। অভিযোগের সঙ্গে নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে নিয়োগ-সংক্রান্ত আড়াই মিনিটের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও সংযুক্ত করা হয়।
রোববার দুপুরে রাহাতের আইনজীবী মোহাম্মদ নুরুল হুদার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। নুরুল হুদা বলেন, '২১ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই অভিযোগ তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যদি সাত দিনের মধ্যে কোনো ফলাফল না দেখা যায়, রিট করা হবে।'
রাহাতের অভিযোগ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়নি। কিছু কর্মকর্তা সরাসরি অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, 'নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছিলেন, চাকরি পেতে হলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় অর্থ প্রদান করতে হবে। তিনি বলেন, “অর্থ ছাড়া চাকরি পাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।'
রাহাত আরও অভিযোগ করেছেন, নিয়োগ বোর্ডে প্রথমে একজন অধ্যাপককে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখা হয়েছিল, পরে তাকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে বসানো হয়। এছাড়া লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও নির্দিষ্ট বিষয় আগেই কিছু প্রার্থীর জন্য সুবিধাজনকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল।
নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মীর মেহবুব আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'এটি মনগড়া। নিয়োগ বোর্ডের স্বচ্ছতা সবার জানা। রাহাত আমারই ছাত্র। ২৩ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তবে প্রথম ১০ জনের মধ্যে পড়তে পারেননি।' বিশেষজ্ঞ পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এটা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। এখানে কে থাকবেন বা থাকবেন না, সেটা প্রশাসন ঠিক করে।” কথোপকথনের বিষয়টিকে তিনি ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, 'অভিযোগের ভিত্তি আছে কি না, তা আমরা দেখব। অভিযোগ করা হলে তা তদন্ত করা হয়। আইনি নোটিশ এলে তারও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন