অনিয়মের অভিযোগ এনে জাকসু নির্বাচন কমিশন সদস্যের পদত্যাগ
জাকসু নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন কমিশনার অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
‘আমি চাপের মুখে পদত্যাগ করিনি। আমাকে বরং চাপ দেওয়া হয়েছে যেন আমি পদত্যাগ না করি। আমি কখনো কাউকে ভয় করিনি, এখনো করব না। আমার কাছে যেটা সঠিক মনে হয়েছে, আমি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে এ কথা বলেছেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। আজ শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন এবং শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাবেক সহসভাপতি। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচনের কার্যক্রম থেকে পদত্যাগ করেন বিএনপপন্থী আরও তিন শিক্ষক।
এর আগে আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে জাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম অভিযোগ করেছিলেন, বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ও অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার নির্বাচন বানচালের ইন্ধন দিচ্ছেন।
রাতে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে গতকাল অনেক ধরনের প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। আগেও আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য পেয়েছি। আমি সব সময় মনে করেছি, একজন শিক্ষক হিসেবে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নির্বাচন কমিশনে আমার মতামত তুলে ধরে সঠিক পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করা।’
এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমাকে বিভিন্নভাবে অনেকেই প্রশংসা করলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যখন আমি কোনো মতামত দিয়েছি অথবা আমি কোনো বিষয় তুলে ধরেছি, তখন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, তা বিভিন্নভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আজ বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সভা ডেকেছিলেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ সভা করেছি। একপর্যায়ে আমি উঠে নামাজ পড়তে গিয়েছি, এসে দেখেছি, ভোট গণনা শুরু হয়ে গেছে। আমি নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ করেছি যে অভিযোগ ও সমস্যাগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করে আপাতত গণনা স্থগিত রাখা হোক। সুষ্ঠু–স্বচ্ছ জাকসুর দিকে এগিয়ে যাই; কিন্তু আমি তাতে ব্যর্থ হয়েছি।’
‘আপনি বিএনপিপন্থী শিক্ষক আর ছাত্রদল ভোট বর্জন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান রাখলে রাজনীতিতে আপনি কোণঠাসা হয়ে পড়বেন, এমন চিন্তা থেকে পদত্যাগ করেছেন কি না?’ এমন প্রশ্নের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের এই নেতা বলেন, ‘প্রথমত, আমি বিএনপি করি না। এটা বাংলাদেশের একটি প্রচলিত ভাষা। আমি বাংলাদেশের একজন স্বাধীন নাগরিক এবং একটি আদর্শে বিশ্বাস করি। সেই আদর্শের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। আমাকে যাঁরা চেনেন, আমি কোনো সময় কারও কথা বা আমার পরিবারের কারও কথায় নতিস্বীকার বা কাজ করি না।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন