[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

হোমনার পর খালিয়াজুরিতে কফিল শাহের আস্তানায় হামলা-অগ্নিসংযোগ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

হামলাকারীরা আস্তানাটির থাকার ঘর, রান্নাঘরসহ আসবাব গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুড়িয়েও দেন। গতকাল সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আমানিপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন
হামলাকারীরা আস্তানাটির থাকার ঘর, রান্নাঘরসহ আসবাব গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুড়িয়েও দেন। গতকাল সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আমানিপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলা সদর ইউনিয়নের আমানিপুর গ্রামে মরহুম কফিল উদ্দিন শাহ্ নামের এক পীরের আস্তানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমানিপুর ছাড়াও খালিয়াজুরি সদর ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তিন শতাধিক লোক নৌকায় করে এসে আস্তানাটি ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করেন বলে জানিয়েছেন ভক্তরা।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার পুলিশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। তবে জিডিতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। গতকাল সোমবার বিকেলে এ হামলার পর থেকেই স্থানীয় বাসিন্দা ও আস্তানের ভক্তদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার হোমনার আসাদপুর গ্রামে অবস্থিত কফিল উদ্দিন শাহের মূল মাজারে হামলার ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি একই গ্রামে অবস্থিত আরও তিনটি মাজারে হামলা-ভাঙচুর করেন একদল লোক।

স্থানীয় বাসিন্দা, পীরের অনুসারী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোমনার আসাদপুর গ্রামের মহসিন নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে মহানবী (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত মহসিন সম্পর্কে কফিল উদ্দিনের নাতি। এর জেরে আসাদপুর গ্রামে পৃথক চারটি মাজারে হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও এর আগেই অভিযুক্ত মহসিনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

নৌকায় করে এসে ভাঙচুর করা হয় কফিল উদ্দিন শাহের আস্তানা। গতকাল সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আমানিপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন
নৌকায় করে এসে ভাঙচুর করা হয় কফিল উদ্দিন শাহের আস্তানা। গতকাল সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আমানিপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

 খালিয়াজুরির আমানিপুর গ্রামেও কফিল উদ্দিন শাহের একটি আস্তানা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় দুই যুগ আগে আস্তানাটি গড়ে ওঠে। প্রায় এক যুগ আগে কফিল উদ্দিন মারা যাওয়ার পর থেকে তাঁর ছেলে আলেক শাহ্সহ স্থানীয় কিছু ভক্ত এটি পরিচালনা করেন। খাদেম হিসেবে এটি দেখাশোনা করেন আমনিপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তি। আলেক শাহ্ মাঝেমধ্যে সেখানে যান। ভক্তরা প্রতি শুক্রবার রাতে সেখানে গানবাজনা করেন। তা ছাড়া বছরে একবার ওরসের আয়োজন করা হয়। কুমিল্লার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এ আস্তানাকে ঘিরেও এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাওর এলাকা আমানিপুর ছাড়াও খালিয়াজুরি সদর ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তিন শতাধিক লোক সোমবার বিকেলে নৌকায় করে একসঙ্গে এসে এ হামলা করেন। তাঁরা আস্তানাটির থাকার ঘর, রান্নাঘরসহ আসবাব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আগুন দিয়ে পুড়িয়েও দেন।

হামলাকারীরা আস্তানাটির থাকার ঘর, রান্নাঘরসহ আসবাব গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুড়িয়েও দেন। গতকাল সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আমানিপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন
হামলাকারীরা আস্তানাটির থাকার ঘর, রান্নাঘরসহ আসবাব গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুড়িয়েও দেন। গতকাল সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আমানিপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

ওই গ্রামের পাঁচজন বাসিন্দা ও পীরের তিনজন অনুসারী বলেন, হামলা চালানোর সময় তাঁরা সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছিলেন। তারপরও বিক্ষুব্ধ লোকজন শোনেননি। এরপর ভেবেছেন উত্তেজিত জনতাকে আর বাধা দিয়ে লাভ নেই। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে ভেবে কেউ আর বাধা দেননি।

পরে একজন অনুসারী বলেন, ‘সুফি এবং বাউল দর্শন কখনোই সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা সমর্থন করে না। ঘটনার পর আমাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।’

নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, খালিয়াজুরির স্থানীয় এবং শাল্লা উপজেলার তিন শতাধিক লোক একত্র হয়ে এ হামলা করেছেন বলে শুনেছেন। ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। 

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন