[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

শাহবাগে পাহাড়ি ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে একটি প্রতিবাদ মিছিল অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক জুম্ম শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও গুইমারায় গুলিতে তিনজনের মৃত্যুর দ্রুত বিচার দাবি করেছেন পাহাড়ি ছাত্র ও জনতা।

রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়। ‘আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে সমাবেশটির সভাপতিত্ব করেন ‘আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’-এর সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, 'পাহাড়ের মানুষ নারীদের নিরাপত্তা চেয়েছেন এবং ধর্ষণকারীদের বিচার দাবি করেছেন। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সময় তাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। যদি আমাদের দাবি অন্যায় হয়, তাহলে সরকার আইন করে ঘোষণা করুন যে পাহাড়ি নারীদের ধর্ষণ অপরাধ নয়। আমরা আর প্রতিবাদ করব না।' 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিকোলাস চাকমা বলেন, 'নারী ও শিশুদের ওপর ধারাবাহিকভাবে সহিংসতা হচ্ছে। খাগড়াছড়ির ঘটনার পর এত দিন পেরিয়ে গেল, তবু রাষ্ট্র পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি হয়নি। যখন বিচারপ্রার্থী মানুষ প্রতিবাদ করছেন, তখন তাদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে। পাহাড়ি জনগণ কি এই দেশের নাগরিক নয়?' 

আদিবাসী যুব ফোরামের সহসভাপতি টনি চিরান বলেন, 'চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বৈষম্য দূর হওয়ার আশা করেছিলেন আমরা; কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। জুম্ম নারীদের ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এ কারণে খাগড়াছড়ির গুইমারায় হামলা ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।' 

হিলম্যান ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরের সম্পাদক রিয়া চাকমা বলেন, 'পাহাড়ি মানুষেরা জীবন ও সম্ভ্রম রক্ষার জন্য চিৎকার করছেন, কিন্তু সরকার তা শুনছে না। সরকার কি অন্ধ হয়ে গেছে?' 

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, 'খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি দেশের জন্য উদ্বেগজনক। পাহাড়ে দমন-পীড়ণ চলতে থাকলে তা সমতলেও ছড়িয়ে পড়বে। রাষ্ট্রকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।' 

সাংবাদিক এহসান মাহমুদ বলেন, 'অতীতে এ ধরনের ঘটনার পর সরকার তদন্ত কমিটি করে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দেয়। কিন্তু তা কার্যকর হয় না। খাগড়াছড়ির ঘটনায় দ্রুত বিচার প্রয়োজন।' 

সভাপতির বক্তব্যে অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, 'পাহাড়ি জনগণের ঘরবাড়ি ও ব্যবসায় হামলা চলছে। নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে দমন করা হচ্ছে। একই দেশে দুই ধরনের আইন চলছে—পাহাড়িদের জন্য এক, সমতলের বাঙালিদের জন্য অন্য। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার আগে জীবন, সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।' 

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফেডারেশনের নেতা মুক্তা বাড়ৈ, লিটন ত্রিপুরা, শান্তিময় চাকমা প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে শাহবাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করা হয়।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন