[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাজারে হামলার ঘটনায় মামলা, আসামি অজ্ঞাতনামা

প্রকাশঃ
অ+ অ-
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আসাদপুর গ্রামে চারটি মাজারে হামলার পর থেকেই ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কুমিল্লার হোমনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট করার জেরে চারটি মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত ও উসকানিদাতাদের কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হোমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হলেও তাঁদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম আজ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে উপজেলার আসাদপুর গ্রামে পৃথক চারটি মাজারে এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকার চারটি মাজার হচ্ছে আসাদপুর গ্রামের আলেক শাহের বাড়িতে অবস্থিত তাঁর বাবা কফিল উদ্দিন শাহের মাজার, একই গ্রামের আবদু শাহের মাজার, কালাই (কানু) শাহের মাজার এবং হাওয়ালি শাহের মাজার। হাওয়া বেগম নামের এক নারী ‘হাওয়ালি শাহ’ মাজার পরিচালনা করেন। তবে সেখানে কোনো ব্যক্তি সমাহিত নেই। ওই বাড়িতে মাজার সদৃশ স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, কফিল উদ্দিনের নাতি মহসিনের বিরুদ্ধে গত বুধবার সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট করার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ওই দিনই তাঁকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। গতকাল সকালে প্রথমে মহসিনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে কফিল উদ্দিন শাহের মাজার ভাঙচুর করা হয়। পরে তাঁদের একটি টিনশেড ও দুটি টিনের বসতঘরে ভাঙচুর শেষে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ঘরটিতে থাকা সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে অন্য তিনটি মাজারে হামলার ঘটনা ঘটে।

এসব হামলার পর আসাদপুর গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আজ দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। প্রতিটি মাজারের সামনে ও ভেতরে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁরা। মাজারগুলোতে ভক্তরা গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি করেছেন।

কফিল উদ্দিন শাহ মাজারের ভক্ত জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘যে মহসিন আমাদের নবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, আমরা তাঁর ফাঁসি চাই, বিচার চাই। কিন্তু তাঁর অপরাধে কেন মাজারে হামলা হবে? এই ঘটনার পর থেকে আমরা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।’

চারটি মাজারে হামলার পরও ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা কেন মামলা করেননি, তা জানতে চাইলে কুমিল্লার সহকারী পুলিশ সুপার (হোমনা-মেঘনা সার্কেল) আবদুল করিম বলেন, ‘এ বিষয়ে তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন। ঘটনার পর আমরা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছি। কিন্তু মাজারগুলোর পক্ষ থেকে কেউ মামলা করতে আসেনি। পরে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ।’

মামলায় আসামিদের সংখ্যা কেন উল্লেখ করা হয়নি, তা জানতে চাইলে হোমনা থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক শ মানুষ মিলে কাছাকাছি সময়ে চারটি মাজারে হামলা চালিয়েছেন। ঘটনার সময় আমরা কেউই ছিলাম না। এ জন্য আসামিদের সংখ্যাও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। যার কারণে মামলায় আসামিদের সংখ্যা অসংখ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

মহসিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল কুমিল্লার আদালতের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গতকাল রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। আগামী রোববার বা সোমবার শুনানি হতে পারে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন