শাহজালালের ভেতরে দায়িত্ব নিল এপিবিএন, সরে যাচ্ছে বিমান বাহিনীর সদস্যরা
![]() |
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নকে (এপিবিএন)। অন্যদিকে বিমান বাহিনীর টাস্কফোর্সের সদস্যদের দায়িত্ব শেষে ব্যারাকে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।
গত এক বছরে বিমানবন্দরের ভেতরে এপিবিএন ও বিমান বাহিনীর এভিয়েশন সিকিউরিটি শাখা (এভসেক)–এর মধ্যে দ্বন্দ্ব নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। এপিবিএনের অভিযোগ ছিল, টার্মিনালের ভেতরে তাদের অফিস জোর করে সরিয়ে দিয়েছে এভসেক। এ নিয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে টানাপোড়েনও দেখা দেয়।
এই পরিস্থিতি সমাধানে বুধবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এক বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়— শীঘ্রই এপিবিএন টার্মিনালের ভেতরে দায়িত্ব নেবে এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরা মূল বাহিনীতে ফিরে যাবে।
২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় এক রাতে দায়িত্ব ছেড়ে চলে যান বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দেওয়া আনসার সদস্যরা। তখন জরুরি ভিত্তিতে বিমান বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই সময়ে এপিবিএনকে টার্মিনালের ভেতরে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়।
এরপর অক্টোবরে এপিবিএন অভিযোগ করে, তাদের অফিসের মালামাল সরিয়ে নিয়েছে এভসেক। এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। তখন থেকেই দুই বাহিনীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। এর মধ্যে যাত্রী হয়রানি ও ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনাও উত্তেজনা বাড়ায়।
বুধবার বিকেল ৩টায় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকী। বৈঠকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান, বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, 'আমাদের কাজে পেশাদারিত্ব ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা জরুরি। আন্তঃসংস্থা সহযোগিতা বাড়াতে হবে।'
আইজিপি বলেন, 'বিমানবন্দরে পুলিশের প্রধান দায়িত্ব অপরাধ প্রতিরোধ ও শনাক্তকরণ। আইন অনুযায়ী এ কাজ অন্য কোনো সংস্থা করতে পারে না।'
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিমানবন্দরের সব সংস্থা বেবিচকের একক তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। দ্রুত এপিবিএন টার্মিনালের ভেতরে দায়িত্ব নেবে, আর বিমান বাহিনী দায়িত্ব শেষে ব্যারাকে ফিরে যাবে। অপারেশনে যেসব সমস্যা আছে, তা সমাধানে আইজিপি ও বেবিচক চেয়ারম্যান আলাদা বৈঠক করবেন। পাশাপাশি সব বিমানবন্দরে প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত নিরাপত্তা সভা হবে। ভবিষ্যতে বেবিচকের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের কাজ আলাদা করার প্রস্তাবও আসতে পারে।
এদিকে সরকার বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারে নতুন বাহিনী এয়ার গার্ড অব বাংলাদেশ (এজিবি) গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বাহিনীর প্রতিনিধিরা এ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন