[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

মহালয়া ঘিরে পঞ্চগড়ের আউলিয়ার ঘাটে এবারও নিরাপত্তা জোরদার

প্রকাশঃ
অ+ অ-

মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আউলিয়ার ঘাটে নৌকায় করতোয়া নদী পার হচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ঘাটের দুই প্রান্তে অবস্থান করছেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তাঁদের সঙ্গে কাজ করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গ্রাম পুলিশ ও সেচ্ছাসেবকেরা। প্রস্তুত রয়েছে ডুবুরি দল। ৪টি নৌকায় সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৩০ জন করে পারাপার করা হচ্ছে যাত্রীদের। প্রতিটি নৌকায় রাখা হয়েছে লাইফ জ্যাকেট। যাত্রী ও মাঝিদের সতর্কতার সঙ্গে পারাপারের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার ঘোষণা করা হচ্ছে মাইকে।

আজ রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে এমন চিত্র দেখা গেছে।

করতোয়া নদীর এই ঘাট পেরিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের ত্রিস্রোতা মহাপীঠধাম শ্রীশ্রী বোদেশ্বরী শক্তিপীঠ মন্দির। আজ সকাল থেকে দেবী দুর্গার আবাহন উপলক্ষে সেখানে মাতৃপূজা, শ্রী শিবপূজা, শ্রী বিষ্ণুপূজা ও চণ্ডিপাঠের মাধ্যমে মহালয়া পালিত হচ্ছে। ভক্ত-পুণ্যার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে মন্দির চত্বর। আশপাশে বসেছে নানা ধরনের দোকানপাট।

২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার দিনে করতোয়া নদীর এই ঘাটে নৌকাডুবির মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সেদিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা ঘাট থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর ডুবে যায়। ওই ঘটনায় ৭১ জনের মৃত্যু হয়। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন সরেন্দ্র নাথ বর্মণ (৬৩) নামের এক ব্যক্তি। সেই ঘটনার পর থেকে প্রতিবছর মহালয়া ঘিরে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা।

ঘাটে রাখা লাইফ জ্যাকেট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নৌকাডুবির ঘটনার পর আউলিয়ার ঘাটে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়াই আকৃতির সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়। তবে নির্মাণকাজ এখনো শেষ না হওয়ায় এবারও পুণ্যার্থীদের নৌকাতেই পার হতে হচ্ছে। অনেকে নদীপথে না গিয়ে সড়কপথ ব্যবহার করছেন। এতে পঞ্চগড়-ভাউলাগঞ্জ ও দেবীগঞ্জ-বড়শশী সড়ক দিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে।

দিনাজপুর থেকে মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন শান্ত রায় (৩০) ও কাকলী রানী (২৫) দম্পতি। শান্ত রায় বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম সেতু হয়ে গেছে। এসে দেখি, এখনো নৌকায় পার হতে হচ্ছে। আগে জানলে হয়তো অন্য সিদ্ধান্ত নিতাম। তবে প্রশাসনের তৎপরতা দেখে ভালো লেগেছে। ২০২২ সালে যদি এমন ব্যবস্থা থাকত, তাহলে হয়তো সেই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’

জয় হরি বর্মণ (৪৫) নামের এক পুণ্যার্থী বলেন, ‘নৌকাডুবির ঘটনাটা এখনো মনে আছে। তারপরও এসেছি। এবার নিরাপত্তা দেখে ভালো লেগেছে। তবে নৌকায় যাত্রীর সংখ্যা কম।’

ঘাট ইজারাদার আবদুল বারেক জানান, চারটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করছে। নদী পার হতে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে। প্রশাসনের নির্দেশে বড় নৌকায় সর্বোচ্চ ৩০ জন এবং ছোট নৌকায় ২০ জন যাত্রী তোলা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার যাত্রীর সংখ্যা অনেক কম বলে জানান তিনি।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মহালয়া উপলক্ষে পুন্যার্থীদের নিরাপদ পারাপারের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঘাটের দুই প্রান্ত ও মন্দির এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও সহায়তা করছে। মন্দিরের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াত থেকেও স্বেচ্ছাসেবকেরা কাজ করছেন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন