{getBlock} $results={3} $label={ছবি} $type={headermagazine}

সুন্দরবনে আবার জাল ফেলছেন জেলেরা, বরাদ্দের চাল মিলেনি কারও

প্রকাশঃ
অ+ অ-

নৌকা টেকসই করতে আলকাতরা দিচ্ছেন এক জেলে। কয়রা উপজেলার সুন্দরবন-সংলগ্ন জোড়শিং এলাকায় | ফাইল ছবি

সুন্দরবনের জেলে ও বনজীবীরা টানা তিন মাস মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষে এখনো সরকারি বরাদ্দের চাল সহায়তা পাননি। ফলে পরিবার নিয়ে তারা পড়েছেন চরম খাদ্যসংকটে। গত তিন মাস অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করেছেন; কারও পরিবার দিনে এক বেলা খেয়েছে, কেউবা ঋণ করে সংসার চালিয়েছেন।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ সময় মাছের পাশাপাশি বন্য প্রাণীরও প্রজনন মৌসুম। তাই জেলে ও পর্যটক না গেলে জীববৈচিত্র্য নিরুপদ্রব থাকে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার সময়ে এবার কোনো চাল পাননি বাগেরহাট, মোংলা, খুলনা ও সাতক্ষীরার হাজারো জেলে। স্থানীয়রা জানান, সমুদ্রগামী জেলেরা প্রতিবছর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় ৮০ কেজি করে চাল পান। কিন্তু সুন্দরবনের জেলেদের সহায়তা দেওয়া হয়নি।

মোংলার জেলে বিদ্যুৎ মণ্ডল বলেন, 'আমাদের বলা হয়েছিল তিন মাস চাল দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই পাইনি। পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে সময় কাটাতে হয়েছে।' 

একই অভিজ্ঞতার কথা জানান শরণখোলার লিটন হাওলাদার। তিনি বলেন, 'স্থানীয় মৎস্য অফিসে নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ভেবেছিলাম সহায়তা পাবো। কিন্তু তিন মাস চলে গেলেও কিছুই পাইনি। শেষে ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে হয়েছে।' 

বন বিভাগ জানায়, গত বছর ১৮ হাজার ৪০০ সুন্দরবনগামী জেলের তালিকা তৈরি করে মৎস্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তারা পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাননি।

খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মনিরুল মামুন বলেন, 'বন বিভাগ সময়মতো সঠিক তালিকা দেয়নি। তাই প্রকৃত জেলেদের হালনাগাদ করা যায়নি, চালও দেওয়া সম্ভব হয়নি।' 

অন্যদিকে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, 'আমরা তালিকা পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা না হওয়ায় জেলেরা সহায়তা পাননি। আগামী বছর যেন সহায়তা পান, সেজন্য এখন থেকেই আলোচনা চলছে।' 

সুন্দরবন রক্ষায় আমরা সংগঠনের সমন্বয়কারী নুর আলম শেখ বলেন, 'বন বিভাগ ও মৎস্য বিভাগের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও গাফিলতির কারণে জেলেরা খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে তাদের তিন মাস অনাহারে-অর্ধাহারে কাটাতে হয়েছে। ভবিষ্যতে একই ঘটনা ঘটলে আমরা আন্দোলন করব।' 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন