অচেতন করে ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণ!
![]()  | 
| শিশু ধর্ষণ | প্রতীকী ছবি | 
মাদারীপুরের কালকিনিতে আট বছরের শিশুকে চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার বিকেলে ওই শিশুকে ‘আশঙ্কাজনক অবস্থায়’ মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, ঘটনাটি জানাজানি হলে তাদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি হলেন কালকিনি উপজেলার সোহাগ শিকদার (৪০)। এলাকায় তিনি বখাটে হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন বলেন, এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিস-মীমাংসা করে তাঁর বিচার ও জরিমানা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে প্রতিবেশী ওই শিশুকে নিজের ঘরে ডেকে নেন সোহাগ। পরে শিশুটির নাকের সামনে চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করেন। তিন ঘণ্টা পর শিশুটির জ্ঞান ফিরলে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি পরিবারের কাউকে না জানাতে বলেন তিনি। জানালে পরিবারের লোকজনকে হত্যার হুমকি দেন। গতকাল সকালে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পরিবার। শিশুটির রক্তক্ষরণ হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কালকিনি থেকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকেলে তাকে ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সিহাব চৌধুরী বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গাইনি চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিকেল টিম গঠন করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’
গতকাল সন্ধ্যায় মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে গেলে এ ঘটনার বিচার পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ের কথা বলেন শিশুটির মা। তিনি বলেন, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে থানা-পুলিশ করতে চান না। তাহলে সোহাগ ও তাঁর লোকজন তাঁদের মেরে ফেলবেন।
শিশুটির মা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমার অবুঝ মেয়েটার সঙ্গে এমনটা কেন করল? কী দোষ ছিল ওর? মা হয়ে ওর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সোহাগের মুঠোফোন নম্বরে কলা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর চাচাতো ভাই মিজান শিকদার বলেন, সোহাগ কোথায় আছেন, তাঁরা জানেন না। বাসায় তাঁর পরিবারও নেই। তিনি অপরাধ করলে বিচার হবে। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনাটি সাজানো ও ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে।
শিশুটিকে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানান মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ঘটনাটি দুদিন আগে ঘটলেও শুরুতে তা গোপন রাখা হয়। জানাজানির পর হাসপাতালে যায় পুলিশ। পরে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে। আর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হবে। ভুক্তভোগীর পরিবারকে নিরাপত্তার বিষয়টিও পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন