প্রতিনিধি ধর্মপাশা
![]() |
রাজধানীর শাহবাগে ছাত্রদলের সমাবেশে নিজেকে ধর্মপাশা থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেওয়া আবুল হোসেন ওরফে মন্টু | ছবি: সংগৃহীত |
রাজধানীর শাহবাগে গতকাল রোববার ছিল ছাত্রদলের সমাবেশ। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও সেখানে জড়ো হন শত শত নেতা–কর্মী। তাঁদের মধ্য থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ব্যক্তির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাঁর নাম আবুল হোসেন ওরফে মন্টু (৪৩)। বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের শরীয়তপুর গ্রামে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, সমাবেশে উপস্থিত থাকা আবুল হোসেনকে অপর প্রান্ত থেকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, ‘আপনি কি ছাত্রদলের?’ এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল হোসেন বলেন, ‘হ্যাঁ, ছাত্রদলের আমি।’ ‘ছাত্রদলের কোন দায়িত্বে রয়েছেন?’ আবুল হোসেনের জবাব, ‘আমি বর্তমানে ছাত্রদলের সেক্রেটারি।’ ‘কোন জেলার?’ জবাবে আবুল হোসেন বলেন, ‘সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা থানা।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, এই বয়সেও তিনি ছাত্রদলের পদে আছেন কী করে? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ওই ব্যক্তি আবুল হোসেন ওরফে মন্টু, যিনি ধর্মপাশার ওয়ার্ড যুবদলের নেতা।
আজ সোমবার বিকেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় আবুল হোসেনের সঙ্গে। নিজেকে ছাত্রদলের নেতা হিসেবে দাবি করা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি গত বুধবার ঢাকার এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গেছিলাম। ছাত্রদলের প্রোগ্রাম হুইন্না ওই দিন (গত রোববার) রাজধানীর শাহবাগে গেছিলাম। তখন একজন আমার সামনে ক্যামেরা ধইরা প্রশ্ন করছইন, আমি ছাত্রদল করি কি না, কোন দায়িত্বে আছি? কোন জেলা থাইক্যা আইছি, কী পদে আছি। সব প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর দিলেও মুখ ফইসকা বইল্লা ফেলছি, আমি ধর্মপাশা থানা ছাত্রদলের সেক্রেটারি। পরে আমি ওই ভাইরে বারবার কইছি, ভাই, আমার ভুল অইয়া গেছে, আমি উপজেলা ছাত্রদলের সেক্রেটারি না, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি। আফনে এই ভিডিওটা ফেইসবুকে ছাইড়েন না। এত কিছু বলার পরও হেইন ভিডিওডা ভিউ ফাইবার লাইগ্যা ফেইসবুকে ছাড়ছইন। পরে অনেকেই শেয়ার দিছইন। অহন এইডা লইয়া জবাব দিতে দিতে আমি অস্থির অইয়া যাইতাছি।’
নিজের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে আবুল হোসেন বলেন আরও বলেন, ‘আমি ক্লাস সেভেন পর্যন্ত লেখাপড়া করছি। অভাবের কারণে আর লেখাপড়া করতাম পারছি না। ২০০৮ সালে আমি ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহসভাপতি ছিলাম। ২০১৮ সালে একই ওয়ার্ডের যুবদলের সভাপতি নির্বাচিত হই। এখনো এই পদেই আছি। আমি কৃষিকাজের পাশাপাশি সবজি ব্যবসায়ী। মুখ ফইসকা যেই কথা বইলা ভুল করছি, এইডার লাইগা আমি অনুতপ্ত।’
বিষয়টি নজরে আনা হলে ধর্মপাশা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ওবায়দুর মজুমদার জানান, আবুল হোসেন ছাত্রদলের কেউ নন। উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইকবাল শিকদার বলেন, ‘অনেক দিন আগে ওয়ার্ড কমিটি হয়েছে। আবুল হোসেন মন্টু যুবদল করেন, এটা ঠিক। আমি এখন ব্যস্ত আছি। তিনি কী পদে আছেন, তা কাগজপত্র না দেখে বলা যাবে না।’
একই তথ্য জানান সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. হেকিম মিয়া। তিনি বলেন, আবুল হোসেন ছাত্রদল করেন না। তিনি ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে কী পদে আছেন, তা জানা নেই।