প্রতিনিধি বাগেরহাট

বাগেরহাটে আসন কমানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। রোববার বাগেরহাট শহরে দশানীর মোড় এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   

বাগেরহাটে একটি সংসদীয় আসন কমানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদে জেলায় তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। রোববার বেলা ১১টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত শহরের দশানি ট্রাফিক মোড়ে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশে বিপুল উপস্থিতির কারণে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে রামপাল ও মোংলা উপজেলা নিয়ে গঠিত ৩ নম্বর সংসদীয় আসনটি ভেঙে দিয়ে ২ ও ৪ নম্বর সংসদীয় আসনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার খসড়া অনুমোদন করে। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে সভা করে গত বৃহস্পতিবার বাগেরহাট জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি ঘোষণা করে। কমিটির ব্যানারে বৃহস্পতিবার থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

সমাবেশে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ। প্রয়োজনে বাগেরহাটকে বাংলাদেশকে থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা সময় দিচ্ছি, তবে কালক্ষেপণ করবেন না। ১০ তারিখের মধ্যে আমাদের আসন ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা না দিলে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বাগেরহাটের বাসিন্দা সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি আমার দাবি নয়, এটি আমার অধিকার। আমার, আমাদের অধিকার ফেরত চাই। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ৬৩টি জেলাই অক্ষত আছে। শুধু আমরা বাগেরহাট আহত হয়েছি। আমরা এখান থেকে পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছি, আমাদের অধিকার ফেরত দেওয়া হোক। আর আমাদের একটা দাবি আছে। বাংলাদেশে ৭২টি উপজেলা আছে, যেখানে একটিমাত্র উপজেলা নিয়ে একটি নির্বাচনী (সংসদীয়) আসন। আমাদেরও এমন উপজেলা আছে, যার আয়তন এবং জনসংখ্যা সেসব উপজেলা থেকে বড় এবং বেশি। সুতরাং আমাদের দাবি, সদর উপজেলাকে একটি আসন করে, বাকি আটটি উপজেলাকে চারটি আসন করতে হবে। দাবি একটাই, আসন চারটি নয়, পাঁচটি চাই।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান বলেন, ‘ইসিকে বলতে চাই, খবরদার, আগুন নিয়ে খেলা করবেন না। বাগেরহাটবাসী আপনাদের এই সিদ্ধান্ত মানে না।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন, বিএনপির নেতা ফরিদুল ইসলাম, ওয়াহিদুজ্জামান দীপু, শেখ মুজিবুর রহমান, খাদেম নেয়ামুল, খান মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেয় সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।

সমাবেশ চলাকালে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।