প্রতিনিধি যশোর
![]() |
অভয়নগর থানা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েক দফায় চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজের স্ত্রী আসমা খাতুন বাদী হয়ে ছয়জনের নাম–পরিচয় উল্লেখ করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন।
এজাহারভুক্ত আসামি কামরুজ্জামান মিঠু নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বাড়ি অভয়নগরের নওয়াপাড়া মহিলা কলেজ গেট এলাকায়। তাঁকে গ্রেপ্তার করে আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহারভুক্ত অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (স্থগিত পদ) আসাদুজ্জামান জনি, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দীন দপ্তরী (সাময়িক বহিষ্কৃত), আসাদুজ্জামান জনির বাবা কামরুজ্জামান ও তাঁদের সহযোগী সৈকত হোসেন হীরা প্রমুখ।
আসমা খাতুন আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছি। একজন আটকও হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে বলা হচ্ছে। যেকোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দিতে বলা হয়েছে। তারপরও ভয়ে আছি। কারণ, মূল আসামি আসাদুজ্জামান জনি ফেসবুকে সক্রিয় থেকে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট দিচ্ছে। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না।’
ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে গত ৩১ জুলাই অভয়নগরের রাজঘাট সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগও করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্ত্রী আসমা খাতুন।
মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রে আসমা খাতুন জানান, গত বছর ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে তাঁর স্বামীকে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (স্থগিত পদ) আসাদুজ্জামান জনি ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা পেয়ে ওই দিন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে ব্যবসায়ী টিপু গ্রামের বাড়ি চলিশিয়া থেকে মোটরসাইকেলে করে নওয়াপাড়া বাজারে যাওয়ার পথে তাঁর পথ রোধ করে জোরপূর্বক বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির কনা ইকোপার্কে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর টিপুর স্ত্রী সেখানে গেলে জনি, সাংবাদিক মফিজ উদ্দিন ও তাঁদের এক সহযোগী তাঁর ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করেন। এরপর তাঁরা শাহনেওয়াজ কবীরের বুকপর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালুচাপা দিয়ে আরও দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় ব্যবসায়ী টিপু বাধ্য হয়ে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপককে ফোন করে টাকা জোগাড় করে তাঁদের দেন। এরপর কাউকে কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদ স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
সহযোগী সৈকত হোসেন হীরার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর স্ত্রী কল ধরে বলেন, হীরা ঢাকায় গেছেন। চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
অভয়নগর থানার ওসি আবদুল আলিম বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।