[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

মধ্যরাতে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ, কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

প্রকাশঃ
অ+ অ-

স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকেরা। গতকাল রাতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস গুরুদয়াল সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে অস্থায়ী ক্যাম্পাস গুরুদয়াল সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় দাবি বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গতকাল বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির অফিশিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রেজিস্ট্রার নাইলা ইয়াসমিনের সই করা একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ কেন্দ্রে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলমান থাকায় ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ, ব্যক্তিগত ও পাবলিক পরিবহন প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং প্রয়োজন ছাড়া প্রবেশ সীমিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দিলীপ কুমার বড়ুয়া ও কয়েকজন শিক্ষক আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য এরই মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের অনুমতিও পাওয়া গেছে। তবু প্রশাসন বলছে, পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও সময় লাগবে। অন্যদিকে গুরুদয়াল কলেজ ভবনে যে একাডেমিক কার্যক্রম চলছে, তারও কোনো চুক্তি নেই। কলেজ চাইলে যেকোনো সময় সরে যেতে হবে। অথচ বিকল্প কোনো অস্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়েও প্রশাসন ভাবছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী রমজান বলেন, পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষসহ নানা অসুবিধায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে একাধিকবার মানববন্ধনসহ নানা আন্দোলনের পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। তাই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাফীউল মুজনীবিন বলেন, দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও স্থায়ী ক্যাম্পাসের বিষয়ে এখনো কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন। এ জন্য ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব বর্জন করছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইংরেজি, গণিত, হিসাববিজ্ঞান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং—এই চার বিভাগে চার বছর মেয়াদি স্নাতক প্রোগ্রাম চালু আছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হওয়া বর্তমানে প্রতিটি বিভাগে শতাধিক শিক্ষার্থী আছেন। এ পর্যন্ত চারটি ব্যাচে মোট পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জেলা সদরের বৌলাই ইউনিয়নের জামতলা ও মইশাখালী বিলের ১০৩ একর জমি বন্দোবস্ত পেতে পরিকল্পনা কমিশনে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল।

২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই কিশোরগঞ্জ শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ১০ তলা একাডেমিক ভবনের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম তলা দুই বছরের জন্য বরাদ্দ নিয়ে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করা হয়। তবে সেটির চুক্তি মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নাইলা ইয়াসমিন বলেন, সরকার পরিবর্তিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। তবে চলতি বছরের জুন মাসের দিকে জমি অধিগ্রহণের জন্য তাঁরা প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছেন। এ নিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগসহ পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জমি অধিগ্রহণ করতে হয়তো ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। তবে জমি অধিগ্রহণ হয়ে গেলে তাঁরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের জায়গায় টিনের চালাঘর বেঁধে হলেও সেখানে চলে যাবেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক উল্লেখ করে উপাচার্য দিলীপ কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘আমরাও চাই দ্রুত এখান থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে। জমি অধিগ্রহণের সব বরাদ্দ আমাদের কাছে আছে। আশা করি, ৮ থেকে ৯ মাসের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের ওই সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে বলছি।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন