দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীর করতে সম্মত বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া
![]() |
| দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হয় | ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে |
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া দুই দেশের সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত করার সম্ভাব্য সুযোগগুলো খুঁজে দেখতে সম্মত হয়েছে। সম্পর্কের উত্তরণের স্বার্থে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের উচ্চপর্যায়ের সফরের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে দুই দেশ।
মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে সম্পর্ককে গভীর করার বিষয়েও অভিন্ন মত দিয়েছে দুই দেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়– পূর্ব ও পশ্চিম) মো. নজরুল ইসলাম। দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী পার্ক ইউনজু।
আলোচনা অত্যন্ত উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব বিষয় নিয়ে গঠনমূলক ও ভবিষ্যৎমুখী আলোচনা হয়। বৈঠকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) অধীনে মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, কোরীয় ইলেকট্রনিকস এবং সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন প্ল্যান্টের স্থানান্তর, জ্বালানি সহযোগিতা, নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেছেন।
বৈঠকে সর্বশেষ ২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফা এফওসির অগ্রগতির পর্যালোচনা করা হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জ্বালানি রূপান্তর, মৎস্য, বায়োটেকনোলজি, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং সামুদ্রিক বন্দর ও শিপইয়ার্ডের আধুনিকীকরণে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোতে অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।
দুই দেশ রাজনৈতিক আস্থা গভীর করতে এবং উন্নয়ন কৌশলগুলোকে এর সঙ্গে মিলিয়ে এগোতে সম্মত হয়। দক্ষিণ কোরিয়া ইডিসিএফ, কোইকা এবং ইডিপিএফের অনুদান ও ঋণের অধীনে বাংলাদেশের উচ্চমানের অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে সহায়তা দিতে এবং কোরীয় উৎপাদন প্ল্যান্ট ও উৎপাদন সংস্থাগুলোকে তাদের শিল্প বাংলাদেশে সম্প্রসারণে উৎসাহিত করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। কোরিয়া দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখার আগ্রহও জোর দিয়ে ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশ মানবসম্পদ উন্নয়নে ইপিএস কর্মসূচির অধীনে নিয়মিত অভিবাসনে এবং এসটিইএম ও টিভিইটি শিক্ষাকে শক্তিশালী করার জন্য শিক্ষা ও কারিগরি সহযোগিতায় চেয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করে এবং তাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য অব্যাহত সহায়তার পাশাপাশি টেকসই মানবিক সহায়তার আশ্বাস দেয়।
দুই দেশ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রধান ইস্যুগুলো নিয়েও আলোচনা করে। অভিন্ন বিষয়গুলোতে বহুপক্ষীয় ফোরামে একে অপরের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

Comments
Comments