প্রতিনিধি সরাইল

পাঁচ কেজি ওজনের কাতলা মাছ শিকার করে শৌখিন মাছশিকারি বাকের মোশাররফ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন তিন লাখ টাকা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সরাইলের কালীকচ্ছ ইউনিয়নের দত্তপাড়ায়  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের কাজীপাড়া এলাকার শৌখিন মৎস্যশিকারি বাকের মোশাররফ। আজ শুক্রবার সকালে জেলার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের দত্তপাড়ার (কলেজপাড়া) বিরেশ দিঘিতে মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তিনি ২৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি টিকিট কাটেন। বেলা ১১টার দিকে ৫ কেজি ৫০ গ্রাম ওজনের একটি কাতলা ধরেন তিনি। পরে আর কোনো মাছ ধরতে পারেননি মোশাররফ। তবে সেই কাতলায়ই প্রথম হয়ে তিনি পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন তিন লাখ টাকা।

আজ সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলে এ প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নেন ৩৭ জন প্রতিযোগী। তাঁদের জন্য ছিল সাত লাখ টাকার সাতটি পুরস্কার। প্রতিযোগিতায় ৫ কেজি ৫০ গ্রাম ওজনের একটি কাতলা ধরে প্রথম হয়েছেন বাকের মোশারফ।

বাকের মোশাররফ বলেন, ‘আজ একটি কাতলা ধরেই প্রথম পুরস্কার পেয়েছি, ভালোই লাগছে। এর আগে ১৪টি কাতলা ধরেও কোনো পুরস্কার পাইনি। আজ এক কাতলায়ই বাজিমাত করেছি।’

সরেজমিনে দেখা যায়, বিরেশ দিঘিতে দিনভর বড়শি দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন শৌখিন মৎস্যশিকারিরা। লটারির মাধ্যমে তাঁদের আসন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ মাছের খাবার প্রস্তুত করছেন, কেউ দিঘিতে বড়শি ফেলছেন। হঠাৎ হঠাৎ মাচা থেকে জোরেশোরে আওয়াজ উঠছে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ থেকেও মাছ ধরতে আসেন কেউ কেউ।

সদর উপজেলার উড়শিউড়া গ্রামের শিতোষ চন্দ্র বিশ্বাস ৪ কেজি ৩৩০ গ্রাম ওজনের কাতলা ধরে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন দেড় লাখ টাকা। কিশোরগঞ্জের ইলিয়াছ মিয়া ৪ কেজি ২১৫ গ্রাম ওজনের কাতলা ধরে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ৭৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম পুরস্কার দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ৫০, ৪৫, ৪০ ও ৩৫ হাজার টাকা করে। দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শিকারিরা মাছ ধরেন।

পৌনে তিন একর দিঘিটির মালিক সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর পরিবার। ওই পরিবারের কাছ থেকে সরাইল মৎস্য চাষ প্রকল্প নামের একটি সমিতি ৯০ লাখ টাকায় বন্ধক নিয়েছে। তারা প্রতিবছর কয়েকবার মাছ ধরার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এর আগে গত ১৮ জুলাই এ বছরের প্রথম প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তখন প্রথম পুরস্কার ছিল আড়াই লাখ টাকা। মৎস্য শিকার প্রতিযোগিতা দেখতে দিঘির চারদিকে দর্শকের সমাগম ঘটে।

সরাইল মৎস্য চাষ প্রকল্পের সভাপতি আলী মিয়া বলেন, এখানে প্রতিবছর এ ধরনের আয়োজন করা হয়। এটি এ বছরের দ্বিতীয় আয়োজন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শৌখিন মৎস্যশিকারিরা এখানে অংশ নিতে আসেন।