প্রতিনিধি বিরামপুর
![]() |
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসককে মারধরের মামলায় পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ ১০ আসামি | ছবি: পুলিশের সৌজন্যে |
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর ছাড়পত্র দেওয়াকে কেন্দ্র করে একজন সহকারী সার্জনসহ চার স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাকিমপুর পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও পৌর শহরের চণ্ডীপুর এলাকার আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (৩৬), ওয়াদুদ হোসেন (৩৬), আলতাফ হোসেন (৪৫) ও মো. আহসান (৩৬); মধ্য বাসুদেবপুর এলাকার ওমর ফারুক (৪৫), তাঁর স্ত্রী সুখী খাতুন (৩০), খোকন মণ্ডল (৩৮), মো. শাওন (৩০) ও দক্ষিণ বাসুদেবপুর এলাকার আমিরুল ইসলাম (৪০)।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল রাতে হাকিমপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুনের পদ স্থগিত করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। এ ঘটনায় আজ দুপুরে মামলা করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল আটটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত ছিলেন সহকারী সার্জন মশিউর রহমান। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখতে যান। পরে তিনি হাসপাতালের ৩ নম্বর কেবিন পরিদর্শনে গিয়ে চিকিৎসাধীন ওমর ফারুক ও তাঁর স্ত্রী সুখী খাতুনের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র নেওয়ার পরামর্শ দেন। এ সময় তাঁরা ছাড়পত্র নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে সহকারী সার্জন মশিউর রহমান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চলে যান। পরে বেলা সোয়া একটার দিকে ওমর ফারুক ও তাঁর স্ত্রী সুখী খাতুন তাঁদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিয়ে বাইরে থেকে ১০–১১ জনকে হাসপাতালে ডেকে আনেন। এ সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন ও তাঁর সঙ্গীরা জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মশিউর রহমান, স্বাস্থ্য সহকারী ফয়সাল হোসেন, স্বাস্থ্যকর্মী রুহুল আমিন ও হোসনে মোবারককে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখান। এ সময় সহকারী সার্জন মশিউর রহমান গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুল্লাহ তাঁর (মশিউর) গালে ঘুষি ও লাথি মারেন। এ সময় তাঁকে বাঁচাতে স্বাস্থ্যকর্মী ফয়সাল হোসেন, রুহুল আমিন, হোসনে মোবারক এগিয়ে গেলে আসামিরা তাঁদেরও এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে জখম করেন।
এ বিষয়ে হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় আজ দুপুরে থানায় একটি মামলা হয়েছে। পরে বিকেলে দিনাজপুর ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় মামলার এজাহারনামীয় ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।