{getBlock} $results={3} $label={ছবি} $type={headermagazine}

যুবদল নেতা হত্যা মামলার আসামি ইউনিয়ন বিএনপি সম্পাদক, ভয়ে বাদী

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনে জয়ের পর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খানকে (মাঝে) শুভেচ্ছা জানাতে আসেন যুবদল নেতা মিরান হত্যা মামলার আসামি মহব্বত মোল্যাসহ (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) অন্য নেতারা | ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় এক যুবদল নেতা হত্যা মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নিহত যুবদল নেতার স্ত্রী হত্যা মামলার বাদীর অভিযোগ, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে নির্বাচন করলেও পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করছে না।

গত ৩০ মার্চ রাতে নাকোল বাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জেলা যুবদলের সদস্য মিরান হোসেন (৪৫)। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী টুম্বা পারভীনের (কেয়া) করা হত্যা মামলায় ১৩ নম্বর আসামি মহব্বত মোল্যা ওরফে মনিরুজ্জামান। তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের মৃত ওহাব মোল্যার ছেলে। ২০ আগস্ট নাকোল ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মহব্বত।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির স্ত্রী টুম্পা পারভীন আজ মঙ্গলবার বলেন, ‘মামলা করে আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, নির্বাচন করছে। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে তাদের ছবি দেখছি। অথচ পুলিশ তাদেরকে ধরছে না। সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি ভয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতে পারি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানা–পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মালেক আজ মুঠোফোনে বলেন, ‘এই মামলায় এখন পর্যন্ত সাত থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মহব্বত মোল্যা নামের ওই ব্যক্তি উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে তাঁকে আমি প্রকাশ্যে দেখিনি। তদন্ত চলমান।’

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহব্বত মোল্যা এর আগে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। তবে ২০১৮ সালের পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।

যুবদল নেতা হত্যা মামলার আসামি ইউনিয়ন বিএনপি সম্পাদক, ভয়ে বাদীইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন যুবদল নেতা হত্যা মামলার আসামি মহব্বত মোল্যা (বাঁ থেকে প্রথম) | ছবি: সংগৃহীত

নাকোল ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বাচ্চু মোল্যা অভিযোগ করেন, মহব্বত মোল্যা দল ছেড়ে নাকোল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক পদে নাম লিখিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের সভা–সমাবেশের অসংখ্য ছবিসহ প্রমাণ জেলা বিএনপির কাছে অভিযোগ আকারে তুলে ধরলেও কোনো কাজ হয়নি। তাঁর পাশাপাশি নতুন যে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন, সেই মো. জুয়েলও বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ছিলেন। অদৃশ্য কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহব্বত মোল্যা যুবদল নেতা মিরান হোসেন হত্যার সঙ্গে এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেন। গতকাল সোমবার মুঠোফোনে  তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কমিটিতে মহব্বত মোল্যা নামে যে ব্যক্তি আছেন, সেটা আমি নই। আমার ভালো নাম মনিরুজ্জামান। মহব্বত হোসেন নামেও ডাকে অনেকে। আর হত্যা মামলায় আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করা হয়েছে।’

শ্রীপুর উপজেলায় বিএনপির পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার দায়িত্বে আছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম। মহব্বত মোল্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মহব্বত নামের ওই নেতার নামে আমরা যেসব অভিযোগ পেয়েছি, সেগুলো তদন্ত করা হয়েছে। দল এসব বিষয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মতো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাইনি।’

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন