প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্তে পদ্মা নদী থেকে শনিবার চার ঘণ্টার ব্যবধানে মো. শফিকুল (৪৫) ও মো. সেলিম (৩৫) নামের দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা শিবগঞ্জের মনাকষা ইউপির তারাপুর হঠাৎপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বিজিবি ও পুলিশের পক্ষ থেকে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

মনাকষা ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোহা. সমির উদ্দীন ও গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার উপজেলার পাকা ইউপির বাতাসার মোড় এলাকার পদ্মা নদীর তীরে ও নদীর ৮ নম্বর বাঁধ এলাকার নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশ দুটি উদ্ধার করেন নিহত দুজনের স্বজনেরা। পরে মাসুদপুর সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি সদস্য, থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশের হেফাজতে লাশ দুটি নেওয়া হয়। শফিকুলের লাশ বেলা দুইটার দিকে ও সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সেলিমের লাশ তারাপুর হঠাৎপাড়ার একটি আমবাগানে নিয়ে আসা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ, শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া, নিহত শফিকুলের স্ত্রীর বড় ভাই মনাকষা ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সমির উদ্দীন ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম পদ্মা নদীতে মাছ ধরার পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে শফিকুল ইসলাম ও একই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোলাম মর্তুজার ছেলে মো. সেলিম (৩৫) নদীপথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান। এর পর থেকেই তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন।

পরে শনিবার সীমান্তবর্তী পাকা ইউপির বাতাসার মোড় এলাকায় পদ্মা নদীর তীর থেকে শফিকুলের লাশটি উদ্ধার করে আত্মীয়স্বজন বাড়ি নিয়ে আসছিলেন। পথে তারাপুর এলাকায় বিজিবি লাশটি নিজেদের হেফাজতে নেয়। স্থানীয় মানুষের দাবি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) নির্যাতনে মারা গেছেন শফিকুল। অন্যদিকে বেলা তিনটার দিকে পদ্মা নদীর ৮ নম্বর বাঁধ এলাকার নদীতে ভাসমান অবস্থায় মো. সেলিমের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অনেকগুলো ফোসকা রয়েছে। এগুলো অ্যাসিডে দগ্ধ হয়ে পড়া ফোসকার মতো। এ ছাড়া তাঁর অনেকগুলো দাঁত ভাঙা ছিল। গলা দিয়ে রক্ত বের হওয়ার চিহ্নও রয়েছে।

৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, লাশ দুটি পুলিশের কাছে হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। কীভাবে তাঁরা নিহত হয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুজনেরই শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে মৃত্যুর কারণ। খোঁজ নেওয়া হলে বিএসএফ জানায়, তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।