রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযান: ডুবুরি তল্লাশি চালালেও অস্ত্র পাওয়া যায়নি
প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জে পুকুরে অনুসন্ধানে নেমেছেন ডুবুরিরা। শনিবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জে একটি কোচিং সেন্টারে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলি ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। অভিযানে অস্ত্রের খোঁজে কোচিং সেন্টারের সামনে পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা খোঁজ করেও কিছুই পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে শনিবার বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত কাদিরগঞ্জ এলাকায় ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামের একটি কোচিংয়ে এ অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। কাদিরগঞ্জের সড়ক বন্ধ করে সেনাসদস্যরা ওই ভবন ঘিরে রাখেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা। যৌথ বাহিনীর ১৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে কোচিং সেন্টারের পরিচালকসহ তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিংয়ের মালিক মোন্তাসেবুল আলম (অনিন্দ্য), মো. রবিন ও মো. ফয়সাল। মোন্তাসেবুল মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শফিউল আলমের (লাট্টু) ছেলে। তাঁদের বাড়ির সঙ্গে আলাদা একটি একতলা ভবনে ওই কোচিং সেন্টার। মোন্তাসেবুল রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের আত্মীয়। আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় মোন্তাসেবুলকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তিনি ওই মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভিযানে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি, সামরিক মানের দুরবিন ও স্নাইপার স্কোপ, ছয়টি দেশি অস্ত্র, সাতটি বিদেশি ধারালো ড্যাগার, পাঁচটি উন্নত মানের ওয়াকিটকি সেট, একটি সামরিক মানের জিপিএস, একটি টিজারগান, বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি কার্টিজ, বিপুলসংখ্যক অব্যবহৃত সিম কার্ড, বিস্ফোরক বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ছয়টি কম্পিউটার সেট, ৭ হাজার ৪৪৫ টাকা, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি মদ ও ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো তাজা অবস্থায় ছিল। পরে বোম ডিসপোজাল ইউনিট নিষ্ক্রিয় করেছে।
পরে কোচিং সেন্টারের সামনে একটি পুকুরে অস্ত্র থাকতে পারে, এমন সন্দেহে দুজন ডুবুরিকে নামানো হয়। বেলা সাড়ে তিনটায় অভিযান শেষ করা হয়। অভিযানে পুকুরে কিছুই পাওয়া যায়নি। তখনই আটক তিনজনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের নগরের বোয়ালিয়া থানার হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ।
এদিকে দুপুরে অভিযান চলাকালে আটক রবিনের মা নাসরিন বেগম এসে কান্নাকাটি শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, ‘আমার ছেলে কিছুই জানে না। এক মাস আগে সে (রবিন) এখানে ঘর ধোয়ামোছার কাজ শুরু করে।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন