প্রতিনিধি কুষ্টিয়া

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ। আজ দুপুরে ক্যাম্পাসে  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হল–সংলগ্ন পুকুর থেকে শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর ভাসমান মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন তাঁর বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ দেলওয়ার। আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে তিনি বাদী হয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় এ এজাহার জমা দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি মেহেদী হাসান। বিকেল সোয়া চারটার দিকে বলেন, ওই এজাহার মামলা হিসেবে রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

সাজিদ আবদুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৭ জুলাই সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের সামনের পুকুর থেকে তাঁর ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় তাঁর পরিবার ও সহপাঠীরা অভিযোগ করেন, সাজিদকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে জানা গেছে, তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল।

এদিকে সাজিদ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আজ বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি প্রশাসন ভবন চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। আজ বেলা ১১টার দিকে আল–কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিলটি বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘বিচার বিচার, বিচার চাই; সাজিদ হত্যার বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, খুনিদের ফাঁসি দে’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

মিছিলে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ, হত্যাকারীদের প্রশাসন এখনো চিহ্নিত করতে পারেনি। প্রশাসন যদি সাজিদ হত্যার বিচার করতে না পারে, তাহলে এই দায়িত্বে থাকার তাঁদের কোনো নৈতিক অধিকার থাকে না। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করতে হবে। সেই সঙ্গে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) মাধ্যমে তদন্ত করে অপরাধীদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

অবস্থান কর্মসূচির একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘সাজিদের হত্যাকাণ্ডের অবশ্যই বিচার হবে। যেহেতু এটি হত্যাকাণ্ড, সেহেতু বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের চাহিদা মোতাবেক যাবতীয় সহযোগিতা করা হবে। জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আর এই দাবি নিয়ে তোমাদের (শিক্ষার্থীদের) নতুন করে আসা লাগবে না। প্রশাসনই তোমাদের টাইম টু টাইম জানাবে, আমরা কী করছি।’