নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
পুলিশের লাঠিচার্জের মুখে দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন একজন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন একদল ব্যক্তি। টানা ৩২ ঘণ্টা অবরোধের পর আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আরেক দল ব্যক্তি নিজেদের ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে ওই অবরোধকারীদের ওপর হামলা করেন। তাঁরা শাহবাগ মোড়ের চারপাশে রাখা ব্যারিকেড (প্রতিবন্ধকতা) সরিয়ে দেন।
এর এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন পুলিশ এসে দুই পক্ষকে লাঠিচার্জ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর শাহবাগ মোড় দিয়ে পুরোদমে যান চলাচল শুরু হয়েছে।
![]() |
শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচির নামে সড়ক অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
অবরোধকারীদের একজন মো. ইয়াছিন বলেন, 'পুলিশ আমাকে পিটিয়েছে। হাসপাতাল থেকে
যাঁরা এসেছেন, তাঁরা আমাদের ওপর হামলা করে মঞ্চ ভেঙে দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে
কেউ কেউ আহত থাকলেও বেশিরভাগ বাইরের লোক, যাঁরা আমাদের আন্দোলন ব্যর্থ
করতে চান।'
আব্দুর রহমান নামের আরেক আন্দোলনকারী বলেন, 'আমরা
সন্ধ্যার পর রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতে অবস্থান করছিলাম। কিন্তু কিছু না বলেই
তারা হামলা চালায়। আমাদের এক বোনের হাত লাঠির আঘাতে ভেঙে গেছে।'
![]() |
শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচির নামে সড়ক অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আন্দোলনের
প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা সৌরভ বলেন, 'পুলিশ ও আরেকটি দল একসঙ্গে আমাদের
ওপর হামলা চালিয়েছে। আমাদের দুজন হাসপাতালে ভর্তি, অনেকেই আহত। এখন আমরা
রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হচ্ছি। পরবর্তী কর্মসূচি সেখান থেকেই ঘোষণা করা হবে।'
শাহবাগ
থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, 'আন্দোলনকারীরা তিনটি রাস্তা আটকে রেখেছিল।
এতে জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছিল। পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা এই দুর্ভোগের
কথা বলে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়েছেন।'
![]() |
পুলিশের লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন আঘাত পেয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে একদল লোক গতকাল সকাল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন। তাঁদের দফায় দফায় বুঝিয়েও সড়ক থেকে সরানো যায়নি। আজ সন্ধ্যায় জুলাই যোদ্ধা দাবি করে অন্য একটি দল শাহবাগে আসে। দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও বিশৃঙ্খলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ দুই পক্ষকেই সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এরপর শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়। এতে ঢাকার বস্ততম এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সারা দিনের পর রাতেও সেখানে অবস্থান নিয়ে অবরোধ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। আজ সকালে বৃষ্টির মধ্যেও একদল আন্দোলনকারীকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখতে দেখা যায়।
অবশ্য সকালে আন্দোলনকারীরা কম থাকায় ফার্মগেট–বাংলামোটর হয়ে যাওয়া গাড়িগুলো শাহবাগ মোড় দিয়ে মৎস্য ভবনের দিকে যেতে পারছিল। আবার কাঁটাবন থেকে আসা গাড়িগুলো বাংলামোটরমুখী সড়কে আসতে পারলেও মৎস্য ভবনের দিকে যেতে পারছিল না। শাহবাগ মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কাঁটাবন অভিমুখী সড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল।
![]() |
পুলিশের লাঠিচার্জের মুখে অবরোধকারীরা সরে গেলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |