[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

নুরুল হক লাঠিপেটা: বিক্ষোভে উত্তপ্ত ২৫ জেলা, জাতীয় পার্টির ছয় কার্যালয় ভাঙচুর

প্রকাশঃ
অ+ অ-

জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসার সামনে কুশপুত্তলিকা দাহ করেন ক্ষুব্ধ জনতা। শনিবার রাজধানীর উত্তরায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

রাজধানীর কাকরাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাঠিপেটায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকসহ নেতা-কর্মীরা আহত হওয়ার ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে জেলায় জেলায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দেশের ২৫টি জেলাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করা হয়। এর মধ্যে রাজশাহী, খুলনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঠাকুরগাঁও ও গাইবান্ধায় জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ে ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের লাঠিপেটায় নুরুল হকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। গুরুতর আহত নুরুল হকসহ ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

৬ স্থানে জাপার কার্যালয়ে হামলা

গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীদের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে দেশের ছয়টি স্থানে জাপার কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল বিকেল পাঁচটার মধ্যে এসব হামলার ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী গণপাড়া মোড়ে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে জাপার জেলা এবং মহানগর কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ওই কার্যালয়ে হামলা চালান। কার্যালয়ের দরজা, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করার পর সাইনবোর্ড খুলে এনে সড়কের ওপর পোড়ানো হয়।

নগরের বোয়ালিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

খুলনায় জাতীয় পার্টির জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশি তৎপরতায় তাঁরা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। হামলাকারীরা প্রধান ফটকের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলেন। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে নগরের ডাকবাংলো মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। গণ অধিকার পরিষদের দাবি, জাতীয় পার্টির নেতা–কর্মীদের মাধ্যমে হামলা, পুলিশের লাঠিপেটা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় তাঁদের ২০ থেকে ২৫ জন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।

টাঙ্গাইল জেলা গণ অধিকার পরিষদের উদ্যোগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নিরালা মোড় পার হয়ে সদর থানার পাশে জেলা জাপার কার্যালয়ে গিয়ে হামলা করে। নেতা–কর্মীরা কার্যালয়ের শাটার ভেঙে ভেতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। পরে মিছিল নিয়ে তাঁরা ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের নগর জলফৈ মোড় অবরোধ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ শেষে বেলা সোয়া একটার দিকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।

হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত নয়টার

দিকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে থেকে মিছিল বের হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রদক্ষিণ করে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসে। সেখান থেকে উপজেলা পরিষদের বিপরীতে প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল রোডে উপজেলা জাপার কার্যালয় ভাঙচুর করেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা।

গতকাল বেলা একটার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা জাপার কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা। হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল থেকে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। তাঁরা কার্যালয়ে ভাঙচুর করার একপর্যায়ে কিছু আসবাব বের করে এনে আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের কাঠপট্টি এলাকায় জেলা জাপার কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। তখন কাঠপট্টি সড়কের প্রবেশমুখে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা সড়কের ওপর বসে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জাপার কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেন তাঁরা। পরে কার্যালয়ের শাটার ভাঙচুর করা হয়।

জেলায় জেলায় বিক্ষোভ

নুরুল হকসহ নেতা–কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত দেশের অন্তত ২৫ জেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা। এর মধ্যে কয়েকটি জেলায় সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।

হামলার প্রতিবাদে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

সিরাজগঞ্জে যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের গোলচত্বর থেকে উত্তরবঙ্গমুখী লেন হয়ে সায়দাবাদ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা।

নীলফামারী শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে গণ অধিকার পরিষদের আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।

বরিশাল নগরের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে জেলা ও মহানগর গণ অধিকার পরিষদ এবং এনসিপির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নীলফামারী, কিশোরগঞ্জ, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, জয়পুরহাট, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর, পঞ্চগড়, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুরের ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন