সংবাদদাতা সিরাজগঞ্জ
![]() |
সিরাজগঞ্জে এনসিপির পথসভায় বক্তব্য দেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদরের স্টেশন বাজার এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা নেমে এসেছিলাম, যেই পরিবর্তন আমরা দেখতে চেয়েছিলাম, সেই পরিবর্তন আমরা এখনো দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের চাওয়া ছিল জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ। সেটা নিয়েও টালবাহানা করা হচ্ছে।’
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর শহরের স্টেশন বাজার গোলচত্বর এলাকায় মুক্তির সোপান শহীদ মিনারে এক পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।
বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে এখন রাজপথে নেমেছেন উল্লেখ করে সভায় নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার জুলুম থেকে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তি দিতে আমরা কোনো আপস করিনি। জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে আমরা মাঠে ছিলাম। আপনাদের সন্তানেরা পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে ছিল। এখনো আমরা যারা জীবিত আছি, আপনারা যাঁরা জীবিত আছেন; আপনার, আমার দায়িত্ব যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা। তাঁদের সেই প্রকৃত মর্যাদা দেওয়া।’
সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্পের ঐতিহ্য তুলে ধরে পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘এই শিল্প আপনার-আমার গর্ব হতে পারত; কিন্তু আমরা সেটা সারা বিশ্বে তুলে ধরতে পারিনি। আমরা আগামীর বাংলাদেশে সিরাজগঞ্জের শিল্প ও ঐতিহ্য পুরো বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর বুকে তুলে ধরব। এ জেলার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সুচিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা হবে।’
দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার ও সংগঠনটির যুব সংগঠক দ্রুতী আরণ্য চৌধুরী।
পথসভার মধ্যভাগে সিরাজগঞ্জে এনসিপির নেতৃত্বদানকারী নেতা হিসেবে জুলাই আন্দোলনের তিন কেন্দ্রীয় নেতা সাঈদ মোস্তাফা, মাহিন সরকার ও দ্রুতী আরণ্য চৌধুরীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। পরে জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা।
এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে যে গণহত্যা হয়েছে, আপনাদের সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে; দেশে গুম, খুন করা হয়েছে; বাংলাদেশে আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছে—সে সবকিছুর বিচার ছাড়াই কি আমরা নির্বাচনের দিকে যাব? আমাদের অবশ্য অবশ্যই এর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচারের রোডম্যাপ দিতে হবে। এ ছাড়া কীভাবে সেই শহীদ পরিবারের সামনে গিয়ে দাঁড়াব। কীভাবে সেই গুলিবিদ্ধ আহত জুলাই–যোদ্ধার সামনে গিয়ে দাঁড়াব? এর জন্য অবশ্যই সুবিচার লাগবে এবং লাগবে সংস্কার। এই সংস্কারের সঙ্গে লাগবে নতুন বাংলাদেশ।’
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের স্টেশন বাজার এলাকায় জুলাই পদযাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি। পরে পদযাত্রাটি স্টেশন বাজার এলাকার কদম ফোয়ারা চত্বর ঘুরে মুজিব সড়ক হয়ে মুক্তির সোপান শহীদ মিনারে পথসভায় মিলিত হয়।