প্রতিনিধি কুমিল্লা
![]() |
কুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়েছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
কুমিল্লার মুরাদনগরে মা ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ৩৯ ঘণ্টা পর থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০–২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে মা, মেয়ে ও ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। তাঁরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমান ওরফে জুয়েলের স্ত্রী রোকসানা বেগম (৫৩), ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। গুরুতর আহত হন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, নিহত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগ এনে এলাকাবাসীকে উসকে দিয়ে হামলা চালানো হয়।
গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নিহত রোকসানা বেগম ওরফে রুবির বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। রাত ১২টার দিকে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ।
মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান আজ শনিবার সকালে বলেন, ‘মামলার কপি এখনো আদালতে পৌঁছায়নি। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। তাই এখনই তাঁদের নাম প্রকাশ করছি না।’ তিনি জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিষয়ে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই চলছে। যাচাই শেষে তাঁদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
ওসি বলেন, ‘ঘটনার পর পুরো এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অনেককে শনাক্ত করেছি। অভিযান চলছে, আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারব।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারটি দুই দশকের বেশি সময় ধরে মাদক ব্যবসায় জড়িত। নারী-পুরুষ মিলিয়ে তাঁদের পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদকের মামলা। তবে অতীতে কখনো তাঁদের ওপর এলাকাবাসী হামলা করেননি।
নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার অভিযোগ করেন, এই ঘটনার পেছনে প্রধান ইন্ধনদাতা চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও মেম্বার বাচ্চু মিয়া। আর হামলার নেতৃত্বে ছিলেন বাছির উদ্দিন। ঘটনার পর থেকেই বাচ্চু মিয়া ও বাছির এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ।
তবে শুক্রবার রাতে চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল অভিযোগগুলো ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বরং ঘটনার আগের দিন আমি স্থানীয় যুবসমাজের সঙ্গে সভা করে সবাইকে বলেছি—কেউ যেন নিজের হাতে আইন তুলে না নেয়।’