পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক

কাটাখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে পড়ায় ১২ গ্রামের মানুষের চলাচলে অসুবিধা দেখা দিয়েছে। আজ শুক্রবার  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বগুড়ার শেরপুরে পানির চাপে কাটাখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে পড়েছে। এতে শেরপুর ও ধুনট উপজেলার অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। এই বাঁধের ওপর দিয়েই এসব এলাকার মানুষ চলাচল করতেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চককল্যাণী গ্রামে প্রায় ৫০ ফুট বাঁধ পানির স্রোতে ভেসে যায়। পাশাপাশি সড়কের পাশের গাছপালা ও দোকানঘর ভেসে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বাঁধ সংস্কারের সময় অপরিকল্পিতভাবে প্লাস্টিকের পাইপ বসানো হয়েছিল। ওই পাইপ দিয়ে দক্ষিণ পাশে পানি প্রবাহিত হওয়ার সময় বাঁধটি ধসে পড়ে।

আজ শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙা বাঁধের দুই পাশে ভিড় করে আছেন এলাকাবাসী। চককল্যাণী গ্রামের আবুল কাশেমসহ অন্তত ১০ জন কৃষক বলেন, বর্ষার সময় এই বাঁধ সংস্কার পরিকল্পনাই ছিল ‘অপরিকল্পিত’। শুষ্ক মৌসুমে কাজটি করা হলে বাঁধ ধসের ঘটনা ঘটত না, সরকারের টাকাও অপচয় হতো না।

চককল্যাণী গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, বাঁধ ধসে সুঘাট ইউনিয়নের চকধলী, চককল্যাণী, কল্যাণী, জয়নগর, জয়লাজুয়ান, বেলগাছি, জোড়গাছা ও আউলাকান্দির সঙ্গে ধুনট উপজেলার পেঁচিবাড়ি, জালশুকা, বিশ্বহরিগাছা ও ভ্রমণগাথি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কৃষকেরা হাটে ফসল তুলতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। এতে রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া নিয়েও বিপাকে পড়ছেন মানুষজন।

প্রায় ৫০ ফুট বাঁধ পানির স্রোতে ভেসে যায়। পাশাপাশি সড়কের পাশের গাছপালা ও দোকানঘর ভেসে গেছে। আজ শুক্রবার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

স্থানীয় ব্যবসায়ী রিপন আহমেদ বলেন, ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বাঁধের দক্ষিণ পাশের ফসলি জমির জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের জন্য বাঁধের মধ্যে প্লাস্টিকের পাইপ বসানো হয়। গতকাল সন্ধ্যায় ওই পাইপ দিয়ে পানি প্রবাহ শুরু হলে বাঁধটি ধসে পড়ে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবদুল জব্বার বলেন, বাঁধ সংস্কারে কোনো অনিয়ম হয়নি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) প্রকল্প থেকে দুই কিস্তিতে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

সুঘাট ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূরনবী মন্ডল বলেন, গত মার্চে কাজ শুরু হলে বর্ষায় বাঁধটি ধসে যেত না। অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় এই অবস্থা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।