নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের | ছবি: সংগৃহীত |
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে দলীয় সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মো. নুরুল ইসলাম গতকাল এ আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের সেরেস্তাদার জাহাঙ্গীর আলম।
আদালত এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের বিরোধ নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন থাকা একটি রিট পিটিশনের (১৫০৫১) উল্লেখ করেন। আদালত বলেছেন, ‘মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের শুনানির জন্য প্রস্তুত অবস্থায় বিচারাধীন আছে। এ পর্যায়ে কারও পক্ষে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সমীচীন নয় মর্মে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়।’
সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, আদালতের এই পর্যবেক্ষণের ফলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এ পর্যন্ত যাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা আইনিভাবে বৈধ নয়। ফলে তিনি সম্প্রতি দলের জ্যেষ্ঠ কো চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু), কেন্দ্রীয় নেতা সোলাইমান আলম শেঠ, জহিরুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ ও দপ্তর সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক খানসহ যে ১১ জন নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন, তাঁরা স্বপদে বহাল রইলেন।
আদালতের এ আদেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কখনোই একক ব্যক্তির মালিকানাধীন সংগঠন নয়। এটি দেশের লাখো মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। আজ আদালতের রায়ে সেই প্ল্যাটফর্ম আবারও গণতন্ত্রের পথে ফিরেছে। মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করি। দেশবাসী ও জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সত্যের জয় হোক, অহংকারের পরাজয় হোক।’
হাওলাদার আরও বলেন, সত্যকে নিশ্চিহ্ন করা যায় না এবং দলীয় গঠনতন্ত্রকে পায়ের নিচে ফেলা যায় না। স্বৈরতন্ত্র, কর্তৃত্ববাদ এবং অবৈধ ক্ষমতা দখলের রাজনীতির বিরুদ্ধে এটি একটি কঠোর বার্তা।
কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার আদালতের এই আদেশ পেয়ে রাতে গুলশানে বৈঠকে বসেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হকসহ এই পক্ষের জ্যেষ্ঠ নেতারা। সবাই দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে পল্লিবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের জাতীয় পার্টি গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।