পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক
আইন পাস হওয়ার দুই যুগ পর গত মাসের শুরুর দিকে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার। প্রথম উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. কুদরত–ই–জাহান।
যোগদানের এক মাসের মাথায় নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতা–কর্মীসহ শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের সাতমাথায় তাঁরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন।
সচেতন নাগরিক ও শিক্ষার্থী সমাজ–এর ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপি বগুড়া জেলা কমিটির সদস্য খোকন মাহমুদ, বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান, মুশফিক শাহরিয়ার ইমন প্রমুখ।
বক্তাদের দাবি, জেলায় যোগ্য কেউ থাকলে তাঁকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা থাকলেও অন্য জেলার প্রার্থীকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনুল হক বগুড়ার বাসিন্দা ও উপাচার্য পদপ্রত্যাশী হলেও তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আমিনুল হক গ্রেড–১–এর শিক্ষক অথচ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কুদরত–ই–জাহান গ্রেড–২–এর শিক্ষক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আমিনুল হক জীবনবৃত্তান্ত দাখিল করতে গেলে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি–সমর্থিত উপাচার্য অধ্যাপক হাছানাত আলী ছিঁড়ে ফেলেছেন। এসব কারণে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণ করে আমিনুল হককে উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে।
গত ৩ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের অনুমতিক্রমে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১–এর ১০(১) ধারা অনুসারে কুদরত–ই–জাহানকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যোগদানের পর থেকে উপাচার্যের মেয়াদ চার বছর হবে এবং বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয় ২০০১ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে। তবে এরপর বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ও আবার আওয়ামী লীগের সরকার থাকলেও উপাচার্য নিয়োগ, স্থায়ী ক্যাম্পাস, নিয়োগ কিংবা অবকাঠামো, এর কোনো কিছুই হয়নি। দীর্ঘদিন আইন কার্যকর না হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আইন, ২০০১–এর ক্ষমতাবলে ২০২৩ সালের ১১ মে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এতে ২০২৩ সালের ২২ মে থেকে আইনটি কার্যকর করার কথা বলা হয়।
বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস কোথায় হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে বর্তমানে ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অস্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন করে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।