পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি। সকাল ১০টার দিকে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের তিলকপুর আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সনদ ও প্রশংসাপত্র দেওয়ার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটির তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে আমিরুল ইসলামের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে তিলকপুর আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ‘তিলকপুর সচেতন নাগরিক’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা অংশ নেন। তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। এর আগে রোববার এক মানববন্ধন শেষে তিলকপুর মুক্তমঞ্চ থেকে ওই প্রধান শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সংগঠক সুমন হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব আহম্মেদসহ সচেতন নাগরিক ও কয়েকজন অভিভাবক। তাঁরা অভিযোগ করেন, তিলকপুর আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম নিয়ম লঙ্ঘন করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এসব বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ে সনদ ও প্রশংসাপত্র নিতে গেলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে, যদিও এ খাতে অর্থ আদায়ের বাধ্যবাধকতা নেই। অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থী এ টাকা দিতে না পারায় নিজেদের সনদ ও প্রশংসাপত্র নেয়নি।

মাহবুব আহাম্মেদ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামের নির্দেশে সহকারী শিক্ষক নাজমুন নাহার এসব টাকা আদায় করেছেন। এ ছাড়া আমিরুল ইসলাম বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ লাখ টাকা তছরুপ করেছেন। তাঁর অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে আমিরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘সনদ, প্রশংসাপত্রসহ যাবতীয় টাকা রসিদের মাধ্যমে আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু অর্থ বিদ্যালয়ের হিসাবে জমা করা হয়েছে। আর বাকি টাকা বিধি মোতাবেক খরচ করা হয়েছে। কিছু ব্যক্তি আমার কাছে টাকা দাবি করেছিলেন, কিন্তু তাঁদের কোনো টাকাপয়সা দিইনি। এ কারণে হয়তো কেউ আমার বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য লোকজন লেলিয়ে দিয়েছেন।’

আক্কেলপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাবেদ ইকবাল হাসানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে চলতি সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।