নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ‘লংমার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত নিয়োগপ্রত্যাশীদের লংমার্চ কর্মসূচি চলাকালে তাঁদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ সময় লাঠিপেটার ঘটনাও ঘটে।
আজ রোববার বেলা দেড়টার দিকে সচিবালয় মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
এনটিআরসিএ থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত হাজারো প্রার্থী নিয়োগ না পাওয়ার প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা ‘লংমার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচির ডাক দেন।
তিনটি দাবি নিয়ে তাঁরা আজ আন্দোলনে নামেন। তাঁদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১৭তম ব্যাচের নিবন্ধিত প্রার্থীদের জন্য আপিল বিভাগের রায় অনুসারে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অন্তত একবার আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে। ১৭তম ব্যাচের বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে। আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএর সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
![]() |
শিক্ষকদের কর্মসূচিতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আজ কর্মসূচির একপর্যায়ে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে তাঁরা সচিবালয় এলাকায় প্রবেশ করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এরপর পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করা হয়। নিক্ষেপ করা হয় সাউন্ড গ্রেনেড।
পুলিশ জানিয়েছে, সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। কিন্তু আজ দুপুরে শিক্ষকেরা এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সচিবালয় এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁদের থামাতে অন্তত পাঁচটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। পাশাপাশি লাঠিপেটাও করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি, পাঁচ থেকে ছয়জন আহত হয়েছেন। সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছিল। সচিবালয়ের মুখে তাঁদের লংমার্চ কর্মসূচি ছিল। সকাল থেকে তাঁরা কর্মসূচি পালন করেছেন প্রেসক্লাবের সামনে। এরপর হঠাৎ বেলা দেড়টার সময় তাঁরা এখানে এসেছিলেন। আমি জেনেছি যে, প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছিলেন তাঁরা।’
মাসুদ আলম আরও বলেন, ‘উনাদের পাঁচজনকে সচিবালয়ে পাঠিয়েছিলাম যে উনারা গিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলে তাঁদের বিষয়গুলো, আপডেটগুলো জেনে আসুক। তো তাঁদের এই পাঁচজন গেছেন। ওই পাঁচজন মনে হয় ওখানে যাওয়ার পর তাঁরা বলছেন যে, এখানে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত যাবেন না।’
উপপুলিশ কমিশনার বলেন, ‘তাঁরা আবার লিংক রোডে চলে আসেন। লিংক রোডে যথারীতি আমাদের একটা ব্যারিকেড আছে। ব্যারিকেডটা যখন ভাঙার চেষ্টা করে, তখন পুলিশ প্রথমে বাধা দেয়, ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু এরপরেও তাঁরা মানছিলেন না, একটু বেপরোয়াও হয়ে গিয়েছিলেন।’
মাসুদ আলম বলেন, ‘সচিবালয়ে তো আমরা যেতে দিতে পারি না। ওখানে তো ১৪৪ ধারা জারি করা আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের মনে হয় এক-দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে হয়েছে। এতে আমাদের দুই-একজন পুলিশ সদস্যও সামান্য আহত হয়েছেন।’
![]() |
সচিবালয়মুখী মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পর আহতদের কয়েকজন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের সভানেত্রী নীলিমা চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আজকে এখানে অবস্থান নিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের ওপরে এই হামলা হল। এটা ক্ষোভের, এটা বেদনার, নিন্দার ভাষা নেই। কেন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে না? কেন অসহায় কিছু মানুষ দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি? এর আমরা অবসান চাই।'
![]() |
নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের সভানেত্রী নীলিমা চক্রবর্তী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |