নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ফাইল ছবি

ভোট ছাড়া নির্বাচন আয়োজনের অভিযোগে বিএনপির মামলার ছয় ঘণ্টার মধ্যেই রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে আটক করেছে কথিত জনতা। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, 'জনতা তাঁকে ঘিরে ফেলে, পরে আমাদের খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসে।' 

ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মহিদুল ইসলাম জানান, শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে আদালতে পাঠানো হবে।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলায় সাবেক সিইসি নূরুল হুদাসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। এ তালিকায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালনকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও রয়েছে।

সাবেক সচিব নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হয় ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।

উত্তরার বাড়ি থেকে আটক সাবেক সিইসি কেএম নূরুল হুদা |  ছবি: সংগৃহীত

কে এম নূরুল হুদাকে আটকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, একদল ব্যক্তি ‘মব’ সৃষ্টি করে কে এম নূরুল হুদার বাসায় যান। এ সময় ডিম ছুড়ে মারাসহ তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। কেউ কেউ ফেসবুকে লাইভও করেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নূরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। এক ব্যক্তি তার গেঞ্জির কলার ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন, পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পুলিশের পোশাক পরা আরেকজন।

উত্তরা পশ্চিম থানার এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশ যাওয়ার আগেই লোকজন তাকে হেনস্তা করে বাসা থেকে নামিয়ে আনে। ডিম ছুড়ে মারে এবং ভবনের মধ্য থেকেই দুটি জুতা নিয়ে রশিতে বেঁধে তাঁর গলায় ঝুলিয়ে দেয়। ওই সময় বাসার সামনে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার নামে স্লোগান দেওয়া হয়।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ‘স্বেচ্ছাসেবক উত্তর’ নাম নিয়ে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। এক ব্যক্তি জুতার মালা থেকে একটি জুতা খুলে সাবেক সিইসিকে মারছেন। পরে পুলিশ এসে জুতার মালাটি খুলে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।